মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকায় বাড়ছে রফতানি। তাই বাণিজ্য সমন্বয়ে জোর দিল রাজ্য সরকার। আর এ ভাবে পশ্চিমবঙ্গ এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নতিকে হাতিয়ার করেই নিশানা করল কর্মসংস্থান বৃদ্ধিকে।
বৃহস্পতিবার বণিকসভা ইন্দো-আমেরিকান চেম্বার আয়োজিত এক সভায় রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী এবং বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্রের দাবি, ভারতের সঙ্গে আমেরিকার যেমন বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ছে, তেমনই সেই সম্ভাবনা জোরালো হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে। এ রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রে সে দেশের প্রযুক্তিরও বড় ভূমিকা রয়েছে। এ দিন সভায় ভার্চুয়াল ব্যবস্থায় বক্তব্য পেশ করেন তিনি।
অমিত জানান, গত অর্থবর্ষে রাজ্য থেকে আমেরিকায় রফতানি বেড়েছে ৫৫%। সে দেশে ভারতের মোট রফতানির ১০ শতাংশই হয় এ রাজ্য থেকে। যে সব পণ্য পাড়ি দেয়, তার মধ্যে রয়েছে সোনার গয়না এবং দামি পাথর, চিংড়ি, শিল্পে ব্যবহৃত দস্তানা, এঞ্জিনিয়ারিং ও ঢালাই পণ্য এবং মাথার চুল। রফতানিকৃত পণ্যের মোট মূল্য ১৩০০-১৫০০ কোটি ডলার। তাঁর মতে, লগ্নি, বাণিজ্য সম্ভাবনা এবং কর্মসংস্থান আরও বাড়াতে পারস্পরিক সমন্বয় আরও মজবুত করা প্রয়োজন। তাতে আমেরিকার মতো বিশাল দেশে পণ্য বিপণনও সহজ হবে। এ রাজ্যের বৈদেশিক বাণিজ্য পরিস্থিতি ক্রমশ যে উন্নত হচ্ছে, সেই দাবিও করেছেন অমিত। বলেছেন, ‘‘রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, আর্থিক দিক থেকে দেশে পশ্চিমবঙ্গ চতুর্থ বৃহত্তম রাজ্য। পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনীতি এ রাজ্যেরই।’’
এ দিনের সভায় অমিতের বার্তা, পশ্চিমবঙ্গ-আমেরিকার বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নত করতে সব রকমের সহযোগিতা করতে তৈরি রাজ্য। ইতিমধ্যেই চিংড়ি চাষ যে ভাবে রফতানিযোগ্য হয়েছে, তাতে সহযোগিতা করছে সে দেশের অ্যারিজ়োনা বিশ্ববিদ্যালয়। কোল-বেড মিথেন, ছোট, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প— সব ক্ষেত্রেই বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা খোলা। সভায় উপস্থিত আমেরিকার কনসাল জেনারেল মেলিন্ডা পাভেক বলেন, ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে প্রযুক্তির অবাধ আদানপ্রদানের ক্ষেত্র প্রস্তুত করার জন্য উভয় দেশই সচেষ্ট। বিশেষত যেগুলিতে দুই দেশ আগ্রহী তার মধ্যে রয়েছে— মহাকাশ বিজ্ঞান, নতুন জমানার টেলিযোগাযোগ, কৃত্রিম মেধা ও সেমিকনডাক্টর। তাঁর দাবি, দু’দেশের মধ্যে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে যাতে আমলাতন্ত্র বাধা অন্তরায় না হয়ে দাঁড়ায়, তার জন্য আমেরিকার সরকার বিশেষ ভাবে সচেষ্ট।