প্রতীকী ছবি।
শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থানকে সামনে রেখে তৃতীয় তৃণমূল সরকার কারিগরি শিক্ষায় বাড়তি জোর দিয়েছিল। যদিও বড় মাপের উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ এখনও সে ভাবে আসেনি রাজ্যে। এই পরিস্থিতিতে এ বার তারা কর্মসংস্থানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করছে বিভিন্ন শিল্প সংস্থাকে। প্রশাসন সূত্রের দাবি, সরকারের এই উদ্যোগে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মী নেবে টাটা-মহিন্দ্রার মতো সংস্থা। যেমন, ট্রাক্টর সার্ভিস বা সারাইয়ের প্রশিক্ষণ দেবে মহিন্দ্রা গোষ্ঠী। টাটা মেটালিক্স শেখাবে সেরামিক-সহ নানা কাজ। খবর, কর্মমুখী প্রশিক্ষণ দিতে জাতীয় স্তরে প্রশিক্ষক সংস্থাগুলির থেকে আগ্রহপত্র চাওয়া হয়েছিল। কর্মকাণ্ডে শামিল হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে প্রায় ১০০টি সংস্থা।
প্রশাসনের ওই সূত্র বলছে, রাজ্যে কর্মমুখী প্রশিক্ষণে জোর দেওয়ার উদ্যোগ বহু দিনের। তবে এ বার কারিগরি শিক্ষার পুরনো ব্যবস্থায় বদল আনার চেষ্টা চলছে। সেই কাজ শুরু হচ্ছে শিল্পের সহযোগিতা নিয়ে। যেখানে বড় মাপের সংস্থাগুলি তাদের প্রয়োজন এবং চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দিয়ে আগ্রহী চাকরিপ্রার্থীদের গড়েপিটে নেবে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এর ফলে বাজার অনুযায়ী দক্ষতা অর্জন করবেন চাকরিপ্রার্থী। কর্মসংস্থান হবে দ্রুত। পশ্চিমবঙ্গের প্রতি আগ্রহ তৈরি হতে পারে বিভিন্ন বড় সংস্থার। বেসরকারি ক্ষেত্রের পাশাপাশি সরকারি স্তরেও প্রকল্প বাস্তবায়নেকর্মী-সহায়কদের পাঠ দেওয়ার প্রস্তুতি চালাচ্ছে কারিগরি দফতর। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, কাজের মানোন্নয়নও এর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। কারণ, অনুদানভুক্ত প্রকল্পে নজরদারি ক্রমশ বাড়াচ্ছে কেন্দ্র।
জানা যাচ্ছে, টাটা মেটালিক্স এবং মহিন্দ্রা অ্যান্ড মহিন্দ্রার পাশাপাশি ওটিস, লার্সেন অ্যান্ড টুব্রোর মতো সংস্থাও রাজ্যের বিভিন্ন আইটিআই-তে তাদের চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খড়্গপুরে কৃষি যন্ত্রাংশের চাহিদা আছে। সেখানে ট্রাক্টর সারাইয়ের প্রশিক্ষণ দেবে মহিন্দ্রা। টাটা মেটালিক্সের সেরামিক এবং অন্যান্য কাজে কর্মী প্রয়োজন। তাই সেই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেবে তারা। বাকিরাও নিজেদের মতো করে দক্ষ কর্মী তৈরি করে নেবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সর্বভারতীয় স্তরের যে সংস্থাগুলি প্রশিক্ষণ দেবে তাদের খরচ মেটানো হবে রাজ্য ও কেন্দ্রের তহবিল থেকে। সংস্থা বাছার জন্য আলাদা কমিটি গড়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে জিও ট্যাগ ও আধার-যুক্ত হাজিরার পরিকল্পনা আছে। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “মূল লক্ষ্য, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রার্থীদের প্রস্তুত করা।” সরকারি নানা প্রকল্পের কাজেও প্রশিক্ষণ দেবেকারিগরি দফতর। প্রশাসনিক সূত্রেরদাবি, স্কুলপড়ুয়াদের পোশাক সেলাই করতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। সেই ব্যবস্থা হয়েছে জল-জীবন মিশন প্রকল্পের জন্য। পর্যটনে প্রশিক্ষণের প্রস্তুতি চলছে।