Duare Shilpo

অস্থির পরিবেশে ‘দুয়ারে উদ্যম’ পিছিয়ে দিল রাজ্য

সরকারি মহল জানাচ্ছে, ‘দুয়ারে উদ্যম’ সফল ভাবে রূপায়ণ করতে উপদেষ্টা হিসেবে প্রাইসওয়াটার্সহাউজ় কুপার্সকে নিয়োগ করেছে রাজ্য। কিন্তু কাজ আপাতত বন্ধ রাখার পক্ষপাতী সরকার।

Advertisement

অঙ্কুর সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১৩
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়ার খুন-ধর্ষণের পরে প্রায় দেড় মাস ধরে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন চলছে। তার উপর হালে রাজ্যের একাংশ বন্যায় বিপর্যস্ত। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে ‘দুয়ারে উদ্যম’ শিবির পিছিয়ে দিল রাজ্য। তা অগস্ট-সেপ্টেম্বরে হওয়ার কথা ছিল। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সব কিছু ঠিক থাকলে পুজোর পরে নভেম্বরের শেষে শুরু হতে পারে। মূলত, রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলিকে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘উদ্যম’ পোর্টালে নথিভুক্ত করাই এই শিবিরের উদ্দেশ্য। সাধারণত এখানে নথিভুক্ত না হলে, ঋণ বা সরকারি ভর্তুকির সুবিধাগুলি পায় না তারা। পাওয়া যায় না রাজ্য ও কেন্দ্রের অন্যান্য সাহায্যগুলিও। সূত্রটির দাবি, ‘দুয়ারে উদ্যম’ শিবিরের প্রস্তুতি আপাতত থমকে রয়েছে।

Advertisement

সরকারি মহল জানাচ্ছে, ‘দুয়ারে উদ্যম’ সফল ভাবে রূপায়ণ করতে উপদেষ্টা হিসেবে প্রাইসওয়াটার্সহাউজ় কুপার্সকে নিয়োগ করেছে রাজ্য। কিন্তু কাজ আপাতত বন্ধ রাখার পক্ষপাতী সরকার। যার অন্যতম কারণ আর জি কর কাণ্ড ঘিরে রাজ্য জুড়ে তৈরি হওয়া অস্থিরতা। একাংশের বক্তব্য, গোটা ঘটনায় যে ভাবে আন্দোলনে শামিল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, তাতে এই মুহূর্তে শিবির করলে সাড়া পাওয়া নিয়েও সংশয় থাকছে।

রাজ্য ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের এক শীর্ষকর্তার দাবি, “অগস্ট-সেপ্টেম্বরে শিবির করার কথা থাকলেও পরিস্থিতি অনুকূল ছিল না। এখন অবস্থা বদলাচ্ছে। সব স্বাভাবিক হচ্ছে। কিন্তু সামনেই পুজো। তাই তার পরে কোমর বেঁধে এই কাজ শুরুর পরিকল্পনা।” তিনি জানান, নাম নথিভুক্তির জন্য এক-দেড় মাস লাগবে। ফলে নভেম্বরের শুরু থেকে ডিসেম্বরের ২৫ তারিখের মধ্যে ব্লক-স্তরে শিবিরগুলি হবে। গত জুনেই প্রাইসওয়াটারহাউজ় কুপার্স এই নিয়ে ছোট সংস্থাগুলির সংগঠন ফসমির সঙ্গে বৈঠক করেছে। ফসমির সভাপতি বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কবে শিবির হবে তা স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। আশা করি আমাদের জানিয়েই সব ব্যবস্থা হবে। শিবির সফল করতে কাজ করবে ফসমির সব সদস্য।’’

Advertisement

যদিও রাজ্যের মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ পাণ্ডে নভেম্বর-ডিসেম্বরে শিবির বসার দাবি উড়িয়ে বলেন, “কবে হবে এখনও ঠিক হয়নি। তবে এই ক্ষেত্রের উন্নয়নের স্বার্থে ব্লক স্তরেই শিবির করে পরিষেবা দেওয়া হবে।’’ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘উদ্যম পোর্টালে নথিভুক্তিতে দেশে পশ্চিমবঙ্গ আট নম্বরে। এই ছবিটা বদলাতে শিবির জরুরি। বিশেষত রাজ্য যেহেতু ছোট শিল্পেই বেশি জোর দেয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে শিবির শুরুর সিদ্ধান্ত সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে।”

গত বছর উদ্যম পোর্টালে নথিভুক্তির কাজ হয়েছিল ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরের অঙ্গ হিসেবেই। সূত্রের দাবি, তাতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য মেলেনি বলেই এ বার আলাদা করে ‘দুয়ারে উদ্যম’ শুরুর পরিকল্পনা। ক্ষুদ্রশিল্প দফতর সূত্রের খবর, দেড় মাস টানা সময় পেলে কাজ সম্পন্ন হবে। ২৩টি জেলা ধরে প্রতি দিনই কোনও না কোনও ব্লকে শিবির হবে। রাজ্যের সিংহভাগ সংস্থা এখনও সরকারি খাতায় নথিভুক্ত নয়। তাই প্রতিটি ব্লকে ‘দুয়ারে উদ্যমের’ চিন্তাভাবনা। কেন্দ্রীয় তথ্য বলছে, ২০২৩ পর্যন্ত রাজ্যের ১২.৪ লক্ষ ছোট সংস্থা উদ্যম নাম লিখিয়েছিল। যদিও নাবার্ডের তথ্যে দাবি, সংখ্যাটা ৯০ হাজারের বেশি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement