ছবি সংগৃহীত।
দীর্ঘ বিতর্কের পরে টেলিকম সংস্থাগুলির বকেয়া স্পেকট্রাম এবং লাইসেন্স ফি মামলায় কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতরের (ডট) হিসেবকেই স্বীকৃতি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সংস্থাগুলি কোন কোন আয়ের (এজিআর) ভিত্তিতে ওই সব ফি দেবে, তা নির্ধারণে ডটের হিসেব নিয়ে আপত্তি জানায় টেলি-শিল্প। কয়েকটি সংস্থা তা সংশোধনের জন্য শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়। বছর দুয়েক ধরে চলা সেই বিতর্কে জল ঢেলে সংস্থাগুলির হিসেব সংশোধনের আর্জিই শুক্রবার খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। ফলে শীর্ষ আদালতের আগের নির্দেশ মেনেই ডটকে বকেয়া মেটাতে বাধ্য থাকবে তারা। আর্থিক উপদেষ্টা এবং মূল্যায়ন সংস্থাগুলির একাংশের আশঙ্কা, গ্রাহককে সংযোগ দেওয়ার মাসুল হার বাড়িয়ে দ্রুত আয় বৃদ্ধির মতো কৌশল না-নিলে ঘুরে দাঁড়াতে দেরি হতে পারে টেলিকম শিল্পের। আর্থিক সঙ্কটে কাবু ভোডাফোন আইডিয়ার (ভিআই) কাছে যা বড় ধাক্কা। বকেয়া মেটানোর পরে ব্যবসা চালানোর টাকা জোগাড় করতে তারা কোন পথে হাঁটবে সেই প্রশ্নও উঠছে।
সিটি, এডেলওয়েইজ়ের মতো উপদেষ্টা সংস্থাগুলির মতে, এই রায়ের জেরে ভোডাফোনের অবস্থা আরও উদ্বেগজনক হল। সে ক্ষেত্রে সরকার রেহাই না-দিলে বা পাওনা নিয়ে রফাসূত্র বার না-করলে কিংবা মাসুল বৃদ্ধি করে আয় বাড়াতে না-পারলে সংস্থাটির ভবিষ্যৎ নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ে তারা। এডেলওয়েইজ়ের আবার ইঙ্গিত, ভবিষ্যতে টেলি পরিষেবার বাজারে শুধু দুই সংস্থাই (রিলায়্যান্স জিয়ো ও এয়ারটেল) হয়তো থাকবে। মূল্যায়ন সংস্থা ইক্রা বলছে, মাসুল বাড়িয়ে বা সম্পদ বিক্রি করে আয় না-বাড়ালে এই ক্ষেত্রের ঘুরে দাঁড়াতে অনেক সময় লাগবে। ফলে বাড়বে সঙ্কট।
২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায় ডটের যে হিসেবকে স্বীকৃতি দিয়েছিল, সেই অনুযায়ী সর্বোচ্চ বকেয়া ছিল ভিআইয়ের, ৫৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। ভারতী এয়ারটেলের প্রায় ৪৪ হাজার কোটি। কিছু টাকা তারা ডটকে মিটিয়েছিল। সেটা বাদে এখনও বাকি ৯৩,৫২০ কোটি। মেটাতে হবে ১০ বছরে। তবে সংস্থাগুলির দাবি ছিল, কিছু ক্ষেত্রে দু’বার বকেয়ার তথ্য ধরা হয়েছে। ফলে ভুল হয়েছে হিসেব। যে কারণে তা সংশোধনের আর্জি নিয়ে ফের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় তারা।
এ দিন এই সংক্রান্ত সমস্ত আবেদন খারিজ করেছে বিচারপতি নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। এর আগে শীর্ষ আদালতের একটি নির্দেশেও বলা হয়, এজিআরের বকেয়ার কোনও পুনর্মূল্যায়ন হবে না। এই ধাক্কায় আজ বিএসই-তে ভিআইয়ের শেয়ারদর এক সময় প্রায় ১৫% পড়ে যায়। দিনের শেষে তা ৯.৬২% কমে। এয়ারটেলের দর প্রথমে ২.৪৯% পড়লেও শেষে সামান্য উঠেছে।