ভোডাফোন।
টেলিকম সংস্থাগুলির বকেয়া স্পেকট্রাম ও লাইসেন্স ফি সংক্রান্ত মামলার চূড়ান্ত রায় মঙ্গলবার দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিপুল বকেয়া ও নগদ জোগানের সঙ্কটে ন্যূব্জ ভোডাফোন-আইডিয়ার (ভিআইএল) ভবিষ্যৎ নিয়ে বাজারে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে সকলের মতো তারাও বকেয়া কিস্তিতে মেটানোর জন্য বাড়তি সময় পেয়েছে। তার পরেই ভিআইএল জানাল, আগামী ৪ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার অর্থ জোগাড় নিয়ে বৈঠকে বসবে সংস্থার পরিচালন পর্ষদ। যদিও সেই অর্থ দিয়ে কোন কোন প্রয়োজন মেটানোর কথা তারা ভাবছে, তা স্পষ্ট করেনি সংস্থাটি। ফলে সংস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। তবে অনেকের মতে, বকেয়া মিটিয়ে ব্যবসা চালাতে মাসুল বৃদ্ধির প্রয়োজন হতে পারে টেলিকম সংস্থাটির।
মঙ্গলবার বেশি রাতে বিএসই-কে পর্ষদ বৈঠকের কথা জানায় ভিআইএল। সেই অনুযায়ী, এক বা একাধিক ভাবে টাকা তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। যেমন, বাজারে বা প্রেফারেন্সিয়াল শেয়ার ছেড়ে, প্রাইভেট প্লেসমেন্ট, সিকিউরিটিজ়ের মাধ্যমে বা আন্তর্জাতিক ডিপোজ়িটরি রিসিট, ঋণপত্র, ডিবেঞ্চার ইত্যাদির মাধ্যমে তারা তহবিল সংগ্রহের কথা ভাবছে। সূত্রের খবর, এ ছাড়া ইন্দাস টাওয়ারে ১১.৫% অংশীদারি বিক্রি করে ৪০৪০ কোটি টাকা আসার কথা ভিআইএলের তহবিলে। পর্ষদের বৈঠকের খবরে এ দিন সংস্থাটির শেয়ার দর এক সময় ১৩.৬১% ওঠে।
বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, আপাতত হয়তো মাসুল না-বাড়িয়েও প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করতে পারবে ভিআইএল। অনেকে আবার মনে করছেন, বিভিন্ন খাতে আয় ও বকেয়ার হিসেব কষে সংস্থা পরিচালনার খরচের ফারাক পূরণ করতে মূলধন জোগাড়ের পাশাপাশি তাদের প্রায় ২০% মাসুল বাড়াতে হতে পারে।
উল্লেখ্য, এয়ারটেল ও ভিআইএলের কর্তারা আগেই মাসুল বৃদ্ধির পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। রিলায়্যন্স-জিয়ো সে ভাবে কিছু না বললেও গত ডিসেম্বরে ওই দুই সংস্থার পথে হেঁটে মাসুল এক দফা বাড়িয়েছে। তবে করোনার প্রেক্ষিতে এখন মাসুল বৃদ্ধি ক্রেতাদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে ভিআইএলের ভবিষ্যৎ নিয়ে বাজারে জল্পনা বাড়ছে। কিছুটা মজা করেই জনপ্রিয় সিনেমার খলনায়কের উদ্ধৃতি ধার করে শিল্পপতি হর্ষ গোয়েন্কার টুইট, ‘‘রবার্ট, একে (ভিআইএল) তরল অক্সিজেনে ফেলে দাও। তরল ওকে বাঁচতে দেবে না। অক্সিজেন ওকে মরতেও দেবে না।’’
টালমাটাল
•ডটের হিসেব ৫৮,২৫৪ কোটি টাকা বকেয়া মেটাতে হবে ভোডাফোনকে। এখনও পর্যন্ত তারা মিটিয়েছে ৭৮৫৪ কোটি।
• সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ১০% দিতে হবে আগামী মার্চের মধ্যে।
• গত অর্থবর্ষে (২০১৯-২০) নিট লোকসান গুনেছে ৭৩,৮৭৮ কোটি টাকা।
• কোনও ভারতীয় সংস্থা কখনও গোটা অর্থবর্ষে এত ক্ষতি দেখেনি।
• চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিক অর্থাৎ গত এপ্রিল-জুনে ক্ষতির অঙ্ক ২৫,৪৬০ কোটি।
• লকডাউনের ওই সময়ে আয় কমে ১০,৬৫৯.৩ কোটি টাকা।