বিমল জালান, প্রাক্তন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর
পেট্রল-ডিজেলের চড়া দর থেকে শুরু করে ডলারে পড়তে থাকা টাকার দাম ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা— ভোটের মুখে এই সব কিছু নিয়ে বেজায় অস্বস্তিতে মোদী সরকার। ক্ষুব্ধ মানুষ। বিঁধছেন বিরোধীরা। এ বার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর বিমল জালানের কথাতেও উঠে এল উদ্বেগের সুর। রবিবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন, টাকার দামের পতন ও অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা এখনও অর্থনীতির পক্ষে চিন্তার কারণ।
শুধু তাই নয়, এ দিন কেন্দ্রের অন্যতম ‘তুরুপের তাস’ শস্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়েও ঠারেঠোরে সাবধান হওয়ার বার্তা দিয়েছেন জালান। তাঁর বার্তা, সহায়ক মূল্য নিয়ে সতর্ক হয়ে পা ফেলা উচিত। কারণ এর জেরে খাদ্য শস্যের দামে যে প্রভাব পড়বে, তা ভোগাতে পারে গ্রাম বা আধা-শহরের গরিব মানুষদের।
প্রসঙ্গত, কৃষক ক্ষোভে জল ঢালতে এনডিএ সরকার আগেই খারিফ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়িয়েছিল। তা যাতে বাস্তবে চাষির ঘরে পৌঁছয় তা নিশ্চিত করতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী অন্নদাতা আয় সংরক্ষণ অভিযান নামে নতুন প্রকল্প চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। যার আওতায় তিনটি বিকল্প ব্যবস্থা থাকবে। এক, সরাসরি চাষিদের থেকে সহায়ক মূল্যে চাল-গম ছাড়াও ডাল, তৈলবীজ, ফসল কেনা হবে। দুই, বাজারের দাম সহায়ক মূল্যের নীচে নামলে সেই ফারাক ভর্তুকি দিয়ে মেটাবে সরকার। চাষিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি সেই ভর্তুকি পৌঁছবে। তিন, চাষিদের থেকে সহায়ক মূল্যে ফসল কেনার ব্যাপারে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে উৎসাহ দেবে রাজ্যগুলি।
এমনিতে ভাল-মন্দের বিচারে মোদী জমানাকে মিশ্র বলারই পক্ষপাতী জালান। প্রশংসা করেছেন বৃদ্ধির হার নিয়ে। জানিয়েছেন, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে। কেন্দ্রকে নম্বর দিয়েছেন জিএসটি, দেউলিয়া আইন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ভর্তুকি পৌঁছনোর মতো সংস্কার আনার জন্য। বলেছেন, এগুলি অর্থনীতির জন্য ভাল। তবে একই সঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন টাকার দামে লাগাতার পতন ও ব্যাঙ্কে অনুৎপাদক সম্পদের প্রশ্নে। যা তাঁর মতে, অর্থনীতির মাথাব্যথার কারণ। আঙুল তুলেছেন অদক্ষ প্রশাসনিক পরিচালনা প্রসঙ্গেও।
যদিও জালানের আশা, দেউলিয়া আইনের হাত ধরে মিটতে পারে অনাদায়ি ঋণের সমস্যা। টাকার ক্ষেত্রে জালানের ভরসা আমদানিতে রাশ টানার মতো কিছু কেন্দ্রীয় পদক্ষেপ। শুধু প্রাক্তন শীর্ষ ব্যাঙ্ক গভর্নর নন, যার ফল দেখতে মুখিয়ে গোটা দেশই।