বিআইএফআরের পথে ইউনাইটেড স্পিরিটস

মঙ্গলবার বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জকে পাঠানো এক চিঠিতে ব্রিটিশ সংস্থা ডিয়াজিও-র শাখা ইউএসএল জানিয়েছে, ক্রমাগত লোকসানের জেরে গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত হিসাবে চার বছরে সংস্থার নিট সম্পদ তার সর্বোচ্চ অঙ্ক থেকে প্রায় ৮৬% মুছে গিয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ ০২:৪২
Share:

বিজয় মাল্য

শিল্প ও আর্থিক পুনর্গঠন পর্ষদ বা বিআইএফআরের আওতায় এসে রুগ্‌ণ সংস্থার তকমা চাইল ধুঁকতে থাকা ইউনাইটেড স্পিরিটস (ইউএসএল)। বিষয়টি নিয়ে শেয়ারহোল্ডারদের সায় পেতে ২২ জানুয়ারি বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) ডেকেছে ভারতের অন্যতম বৃহৎ মদ প্রস্তুতকারক সংস্থাটি।

Advertisement

মঙ্গলবার বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জকে পাঠানো এক চিঠিতে ব্রিটিশ সংস্থা ডিয়াজিও-র শাখা ইউএসএল জানিয়েছে, ক্রমাগত লোকসানের জেরে গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত হিসাবে চার বছরে সংস্থার নিট সম্পদ তার সর্বোচ্চ অঙ্ক থেকে প্রায় ৮৬% মুছে গিয়েছে। নিট লোকসানের বহর দাঁড়িয়েছে ৫,০৪৫.৪৫ কোটি টাকা। ফলে রুগ্‌ণ শিল্প আইনের আওতায় সংস্থাকে রুগ্‌ণ ঘোষণা করে বিআইএফআরে যাওয়ার কথা ভাবছে ইউনাইটেড স্পিরিটস। উল্লেখ্য, কোনও সংস্থার ক্ষেত্রে পরপর চার বছরে সর্বোচ্চ নিট সম্পদের ৫০% মুছে গেলেই তারা বিআইএফআরে যেতে পারে।

মূলত বিভিন্ন শাখা সংস্থাকে দেওয়া বকেয়া ঋণ এবং লগ্নি থেকে আয় না-হওয়াকেই এ দিন সম্পদ মুছে যাওয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইউএসএল। সংস্থার বর্তমান চেয়ারম্যান এবং প্রাক্তন মালিক বিজয় মাল্যর আর এক মদ তৈরির সংস্থা ইউনাইটেড ব্রুয়ারিজ-সহ একদা ইউএসএল-এর বিভিন্ন শাখায় ক্রমাগত ঋণ দেওয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি লগ্নির সিদ্ধান্ত নেওয়াই বুমেরাং হয়েছে বলে দাবি তাদের। এর সঙ্গেই লোকসানে ইন্ধন জুগিয়েছে পুরো উৎপাদন ক্ষমতা কাজে লাগাতে না-পারা, ব্যবসা চালানোয় দক্ষতার অভাব এবং বিদেশি শাখা সংস্থাগুলিকে টাকা জোগানোর সিদ্ধান্ত। তবে বিআইএফআরে গেলেও সংস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী ডিয়াজিও। বিশেষ করে গত ছ’মাসে যে-ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর পথে হেঁটেছে ইউএসএল, তা প্রত্যাশা আরও বাড়িয়েছে, দাবি তাদের।

Advertisement

প্রসঙ্গত, গত বছরই বিজয় মাল্যর ইউনাইটেড স্পিরিটসের সিংহভাগ অংশীদারি হাতে নিয়েছিল স্মার্নঅফ ভদকা, জনি ওয়াকার হুইস্কির দৌলতে ভারতের বাজারে পরিচিত ডিয়াজিও। ইউনাইটেড স্পিরিটসে তাদের মালিকানা দাঁড়িয়েছে ৫৪.৮ শতাংশে। এর ফলে ইউবি গোষ্ঠীর মূল সংস্থাটির নিয়ন্ত্রণ চলে গিয়েছে বিশ্বের এই বৃহত্তম মদ প্রস্তুতকারকের হাতে। ভাঁড়ারে এসেছে ম্যাকডাওয়েল’স নাম্বার ওয়ান, রয়্যাল চ্যালেঞ্জ, হোয়াইট মিসচিফ বা ব্ল্যাক ডগ-এর মতো জনপ্রিয় মদের ব্র্যান্ড।

অধিগ্রহণের পর সংস্থার হাল ফেরাতে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে ডিয়াজিও। বিশেষ করে নতুন স্বাধীন ও এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং এমডি-সিইও নিয়োগের মাধ্যমে পরিচালন ব্যবস্থার খোলনোলচে পাল্টানোর চেষ্টা চালিয়েছে তারা। ভাবমূর্তি ফেরাতে পর্ষদ থেকে মাল্যকে সরানোরও প্রস্তাব দিয়েছিল ব্রিটিশ সংস্থাটি। বিদেশে ডিয়াজিও-র শাখা সংস্থার সঙ্গে ইউএসএল-এর চুক্তির মাধ্যমে তাদের নামী ব্র্যান্ডের মদ তৈরি ও বিক্রির জন্যও কথাবার্তা চলছে। — সংবাদ সংস্থা

যার ফল হিসেবে গত জুনে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে ১৯ কোটি টাকা নগদ মুনাফার মুখ দেখেছে ইউএসএল। পরের তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০০ কোটিরও বেশি। কিন্তু এর পরেও নিট সম্পদ মুছে যাওয়া আটকাতে পারেনি তারা। ফলে বিআইএফআরের দ্বারস্থ হওয়ার এই সিদ্ধান্ত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement