প্রতীকী ছবি।
মোদী সরকারের ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে ‘ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ ডাক দিয়ে আন্দোলন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্মী ইউনিয়নগুলি। কৃষক আন্দোলনের সাফল্যে উজ্জীবিত হয়ে আরও কঠোর প্রতিরোধের হুমকিও দিয়েছে। সরকারের উদ্দেশে তাদের বার্তা, বিরোধিতায় শামিল হতে ডাক দেওয়া হবে সাধারণ মানুষকেও। প্রচার করা হবে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারি সংস্থার হাতে গেলে কী ভাবে ধাক্কা খাবে আমজনতার স্বার্থ।
বেসরকারিকরণের লক্ষ্যে ব্যাঙ্ক আইন সংশোধনী বিলটি ২৯ নভেম্বর শুরু হতে চলা সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেই পাশ করতে চায় কেন্দ্র। তবে ইউনিয়ন নেতারা বলছেন, চাষিদের নাছোড় প্রতিবাদের মুখে তিনটি কৃষি বিল প্রত্যাহার তাঁদের মনোবল বাড়িয়েছে। ধর্মঘট-সহ ঠাসা কর্মসূচি সামনে। সকলকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন হবে। ব্যাঙ্ক অফিসারদের সংগঠন আইবক-এর সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্ত বলেন, “সরকার বেসরকারি শিল্পপতির কাছে ব্যাঙ্ক বেচে দিলে মানুষ কেন বিপদে পড়বেন বোঝাবো। প্রতিরোধ চলবে ‘ব্যাঙ্ক বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ ডাক দিয়ে। সামাজিক মাধ্যমে প্রচার হবে।’’ আইবকের রাজ্য সম্পাদক সঞ্জয় দাস জানান, গতকালই কলকাতা-মু্ম্বই থেকে দিল্লি রওনা দিয়েছেন আন্দোলনকারী কর্মীরা।
পৌঁছবেন ২৯ নভেম্বর। তাঁরা পথে আন্দোলনের পক্ষে প্রচার চালাবেন।
সৌম্যবাবুর প্রশ্ন, দেশে মোট ব্যাঙ্ক আমানতের ৭০% রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে। বেসরকারি উদ্যোগপতি ব্যাঙ্ক কিনলে গ্রাহকের আমানতে আর সরকারি গ্যারান্টি থাকবে? অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কৃষি, স্বনির্ভর গোষ্ঠী-সহ গ্রামীণ ক্ষেত্রে যে ভাবে ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও তাদের উদ্যোগে তৈরি ৪৩টি আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ঋণ বিলি করে, তেমন করে করবে? জনহিত সরকার করতে পারে, বেসরকারিরা করে কি? ব্যাঙ্ক মহলের দাবি, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির ৩১% শাখাই গ্রামীণ। ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেগুলিও। কর্মী ছাঁটাইয়ের চিন্তাও থাকছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সংযুক্তিতেই গত চার বছরে ৩৩২১টি শাখা উধাও হয়েছে। কর্মী কমেছে ৭৪,০০০ জন।
ইউনাইটেড ফোরাম অব ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন্সের আহ্বায়ক গৌতম নিয়োগী এবং কর্মী ইউনিয়ন এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগর জানান, “২৯ নভেম্বর থেকেই দেশ জুড়ে ধর্না, বিক্ষোভ শুরু করবেন ব্যাঙ্ক কর্মীরা। কলকাতায় তা হবে ৩ ডিসেম্বর। যে দিন সংসদে ব্যাঙ্ক বিল পাশ করানোর চেষ্টা হবে, সে দিনই দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্না দেবেন তাঁরা। সেখান থেকেই টানা ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের দিন ঘোষণা হবে।’’