Government

ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি ইউনিয়নের 

রবিবার সরকারি সূত্রের খবর, চলতি অর্থবর্ষে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ হওয়ার সম্ভাবনা কম।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২০ ০৪:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি

দেশে যে চারটির বেশি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক রাখবে না মোদী সরকার, সম্প্রতি স্পষ্ট হয়েছে সেই বার্তা। তার পরেই ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের নতুন কৌশলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কর্মী ইউনিয়নগুলি। প্রয়োজনে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটও হবে, জানিয়েছে তারা।

Advertisement

তবে রবিবার সরকারি সূত্রের খবর, চলতি অর্থবর্ষে কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, একে তো তাদের শেয়ার দর এখন কম। তার উপরে করোনার আবহে ব্যাঙ্কগুলির সম্পদের একাংশ ফেরত পাওয়া নিয়েও সংশয় বেড়েছে। সূত্রটির দাবি, আর্থিক স্বাস্থ্য না-ফেরায় এখনও ইন্ডিয়ান ওভারসিজ়, সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক-সহ চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিধিনিষেধের (পিসিএ) আওতায়। ফলে এখনই বিক্রি করে লাভ নেই।

সম্প্রতি কেন্দ্র জানিয়েছে, ‘স্ট্র্যাটেজিক সেক্টর’ হিসেবে চিহ্নিত ক্ষেত্রে চারটির বেশি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা থাকবে না। থাকলে, বাকিগুলির বেসরকারিকরণ হবে। আর তার ক’দিন পরেই সরকারের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন বলেন ব্যাঙ্কিং শিল্পকে স্ট্র্যাটেজিক সেক্টর হিসাবে গণ্য করার সিদ্ধান্তের কথা। যার অর্থ, এখন যে ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক রয়েছে, সেগুলির সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে চারে। যদিও বাকিগুলিকে ওই চারটি ব্যাঙ্কের সঙ্গে মেশানো হবে, নাকি বেসরকারি ব্যাঙ্ক-কে বেচা হবে সেটা বলা হয়নি।

Advertisement

তবে ইউনিয়নগুলির আশঙ্কা, বেসরকারিকরণের পথেই হাঁটবে সরকার। যাতে কোষাগার ভরা যায়। অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজেন নাগর এবং অন্য নেতারা জানান, এর বিরুদ্ধে বড় মাপের আন্দোলনে নামবেন তাঁরা। প্রয়োজনে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটও ডাকা হবে। রাজেনবাবুর বক্তব্য, ‘‘রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে টাকা রাখার ক্ষেত্রে আমানতকারীদের ভরসা এটাই যে, জমা টাকা সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব কেন্দ্রেরও।’’ তাঁদের প্রশ্ন, তা হলে কি সেই দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতেই ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণে এতটা তৎপর সরকার? ক্ষুব্ধ কর্মীদের একাংশ বলছেন, যখনই বেসরকারি ব্যাঙ্ক আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক-কে এগিয়ে দেওয়া হয়েছে উদ্ধারের কাজে। এখন সমস্যায় থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিকে চাঙ্গা না-করে, বেচে দেওয়ার চেষ্টা কেন?

আইবকের যুগ্ম সম্পাদক সঞ্জয় দাস বলছেন, “মুনাফার কথা না-ভেবে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পরিষেবা দেয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক। কৃষিঋণ বণ্টন থেকে শুরু করে বহু সরকারি প্রকল্প বিনা মুনাফায় কার্যকর করে। যেটাকে বলে ‘মাস ব্যাঙ্কিং’। বেসরকারি ব্যাঙ্কের পরিষেবা ‘ক্লাস ব্যাঙ্কিং’। অর্থাৎ মুনাফা যেখানে, সেখানেই পরিষেবা।’’ আর ইউনাইটেড ফোরাম অব ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন্সের আহ্বায়ক সিদ্ধার্থ খানের অভিযোগ, “রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির প্রধান সমস্যা অনুৎপাদক সম্পদ। যার প্রায় পুরোটাই বেসরকারি সংস্থাগুলি ঋণ না-মেটানোয় হয়েছে। তা হলে আগের দফার ব্যাঙ্ক সংযুক্তির পরে অনেক ক্ষেত্রে ওই সব ঋণ হিসাবের খাতা থেকে মোছা হল কেন? দেউলিয়া আইনের মাধ্যমেও অনাদায়ি ঋণের বড় অংশই বা মকুব হচ্ছে কেন?’’ সংগঠনগুলির তোপ, ব্যাঙ্ক পরিষেবা দিতে এখন ধার শোধ না-করা ওই শ্রেণিকেই বেছে নিতে চায় কেন্দ্র। এটা মানা যায় না।

আরও পড়ুন: সরকারকে নতুন করে কষতে হবে বাজেটের হিসেব

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement