নির্মলা সীতারামন। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটে বিরোধীরা বেকারত্বকে দেশের সব থেকে বড় সমস্যা হিসেবে তুলে ধরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারে নেমেছিলেন। বিজেপিকে ভোটে তার খেসারতও দিতে হয়েছে। সূত্রের খবর, এ বার ফের ক্ষমতায় আসার পরে তাই বেকারত্বের সমস্যায় নজর দিতে চলেছে মোদী সরকার। আজ তাদের অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবার দায়িত্ব নিয়েছেন নির্মলা সীতারামন। আগামী মাসের দ্বিতীয়ার্ধে তিনি চলতি অর্থবর্ষের পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবেন। সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, সেখানে বেকারত্বের সমস্যা সমাধানে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলে বার্তা দেবে কেন্দ্র।
নির্মলা প্রথম মোদী সরকারের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। দ্বিতীয় দফায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। দেশের প্রথম পূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত মহিলা অর্থমন্ত্রী হয়ে এখনও পর্যন্ত ছ’বার বাজেট পেশ করেছেন। তার মধ্যে ভোটের আগের অন্তর্বর্তী বাজেটও রয়েছে।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, জুলাইয়ে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করার সময় সীতারামন কারখানায় উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে বেকারত্বের সমস্যা সমাধান করার বার্তা দেবেন। লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপির ইস্তাহারে কারখানায় উৎপাদন বাড়াতে আরও উৎসাহ ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। বৈদ্যুতিন, প্রতিরক্ষা, মোবাইল, গাড়ির ক্ষেত্রে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের সাফল্যে ভর করে অন্যান্য ক্ষেত্রেও একই ভাবে কর্মসংস্থান বাড়ানোর চেষ্টা হবে। কারখানার উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত উৎসাহ ভাতা বা ‘প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেন্টিভ’ (পিএলআই) প্রকল্পের পাশাপাশি নতুন উদ্ভাবনী প্রকল্পেরও ঘোষণা হতে পারে বাজেটে।
একই সঙ্গে পরিকাঠামো তৈরির মতো মূলধনী খরচের জন্য মোদী সরকার যে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করে আসছে, সেই ধারাও অব্যহত থাকবে। অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, পরিকাঠামো তৈরিতে খরচ হলে সেখানেও যথেষ্ট কর্মসংস্থান হয়। অন্তর্বর্তী বাজেটে ১১.১১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। আগামী চার বছরই পরিকাঠামো গড়তে বিপুল টাকা ঢালা হবে। পাঁচ বছরের সরকারি পরিকল্পনা তুলে ধরা হবে আসন্ন বাজেটে। বেশ কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, দলের ইস্তাহারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, গাড়ি ও ব্যাটারি চালিত বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরিতে ভারতকে বিশ্বের প্রথম সারিতে নিয়ে যাওয়া হবে। ২০৩০-এর মধ্যে বস্ত্র ও বৈদ্যুতিন শিল্পের আন্তর্জাতিক উৎপাদন কেন্দ্র হয়ে উঠবে দেশ। এ ক্ষেত্রেও কর্মসংস্থান তৈরিই সরকারের পাখির চোখ। বাজেটে তার রূপরেখা থাকবে।
অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, এখনও পর্যন্ত কর বাবদ আয় যথেষ্ট ভাল। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক নিজের উদ্বৃত্ত তহবিল থেকে সরকারের হাতে বিপুল অর্থ তুলে দিয়েছে। ফলে রাজকোষ ঘাটতি নিয়ে বিশেষ চিন্তা নেই। বরং বাজারে কেনাকাটা বাড়াতে সরকারি খরচ বৃদ্ধির জায়গা রয়েছে। তবে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি চিন্তায় রাখছে সরকারকে। খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধি ৫ শতাংশের নীচে নামলেও, আনাজ ও ডালের মতো খাবারগুলির চড়া দাম পরিস্থিতিকে কঠিন করে তুলছে।