বাজেটের দিকে তাকিয়ে শিল্পমহল। —ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বলেছিলেন, ‘‘সাহসী হয়ে লগ্নি করুন’’। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, শিল্প সত্যি শেষ পর্যন্ত সাহসী হবে কি না, সেই সিদ্ধান্তের ‘বল’ এ বার মোদীর কোর্টেই। এটা দেখার অপেক্ষায় যে, ১ ফেব্রুয়ারির বাজেটে কতটা মানা হয় শিল্পের দাবি। পুঁজি আসার পথ চওড়া করে অর্থনীতিতে প্রাণ ফেরাতে জাঁতাকল ভেঙে কতটা বেরোতে পারেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
সূত্রের খবর, শিল্পের দাবি মেনে ডিভিডেন্ড বন্টন ও দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভের করে বড় ঘোষণা হতে পারে। উদ্দেশ্য, সংস্থাগুলিকে লগ্নিতে আগ্রহী করা। কারণ, কেন্দ্র কর্পোরেট কর কমালেও লগ্নি ফেরেনি। শিল্পের প্রশ্ন, বাজারে চাহিদা নেই। লগ্নি করে লাভ? অথচ পুঁজি না-আসায় কর্মসংস্থান হচ্ছে না। তাই বাজেটের মাধ্যমে শিল্পকে উৎসাহী করতে চান নির্মলা।
শিল্প চায় পুঁজির জন্য ব্যাঙ্ক ঋণের বাইরে কর্পোরেট ক্ষেত্রে লগ্নিকারীদের উপরে ভরসা করতে। তাতে সস্তায় পুঁজি মেলে। কিন্তু বাধা ডিভিডেন্ড বণ্টনে কর। লগ্নিকারীদের ডিভিডেন্ড দিলে সংস্থাকেই তাতে কর মেটাতে হয়। অর্থ মন্ত্রক সূত্রে খবর, ওই দায় এ বার ডিভিডেন্ড প্রাপকের উপরে বর্তাতে পারে। এখন কর্পোরেট কর দিয়ে ডিভিডেন্ডে ১৫% কর মেটাতে হয়। বদলাতে পারে তা। শেয়ারে লগ্নি টেনে সূচককে চাঙ্গা করতে, দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভ করেও সুরাহা দেওয়া হতে পারে। এখন শেয়ার ১২ মাস ধরে রেখে বিক্রি করলে, লাভ ১ লক্ষ টাকার বেশি হলে ১০% কর লাগে। খবর, এই সময়সীমা ২৪ মাস হতে পারে।
চ্যালেঞ্জ যেখানে
• অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে শিল্প মহলকে লগ্নিতে উৎসাহী করা।
• পণ্যের চাহিদা বাড়ানো, যাতে বিক্রিবাটা ভাল হয়।
• ব্যাঙ্ক ঋণের বাইরেও কর্পোরেট সংস্থাগুলির জন্য পুঁজির বন্দোবস্ত। সস্তায় হলে আরও ভাল।
• কারখানার উৎপাদন ও পরিষেবা ক্ষেত্রের করের হারে সামঞ্জস্য আনা।
• শেয়ার বাজারকে চাঙ্গা রাখার জন্য লগ্নির প্রবাহ বহাল রাখার ব্যবস্থা।
এক শিল্পপতি বলেন, ‘‘কেন্দ্র ১০০ লক্ষ কোটি টাকার পরিকাঠামো প্রকল্প ঘোষণা করেছে। এই লগ্নির বড় অংশ বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে আসবে। তবে শুধু ব্যাঙ্ক ঋণ নয়, পুঁজির জোগানে নয়া মডেল দরকার। তাই কর্পোরেট লগ্নিতে কর ছাড় চাই।’’ কর্পোরেট করে এখন
দু’টি হার ২২% ও ১৫%। সিআইআই সভাপতি বিক্রম কির্লোস্করের মতে, ‘‘ছাড়, উৎসাহ ভাতা তুলে ২০২৩ সালের ১ এপ্রিলের মধ্যে সব ক্ষেত্রে কর্পোরেট কর ১৫% হোক।’’ শিল্পের যুক্তি, কর্পোরেট কর কমলেও লগ্নি নেই। কারণ, বাজারে চাহিদা ফেরেনি। আর কারখানার উৎপাদন ও পরিষেবা ক্ষেত্রের মধ্যে করের হারেও ফারাক দেখা দিয়েছে। ফলে সামঞ্জস্য জরুরি।