ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতির মাসুল গুনে লকডাউনের আগেই মাথা তুলছিল বেকারত্বের হার। করোনা রুখতে দেশ বাড়িবন্দি হওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যেই তা পৌঁছল চোখ কপালে তোলা উচ্চতায়।
উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র সমীক্ষা অনুযায়ী, ২৯ মার্চ ও ৫ এপ্রিল শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হার ২৩% পেরিয়েছে। জনতা কার্ফু ঘোষণার দিন (২২ মার্চ) শেষ হওয়া সপ্তাহেও যা ছিল ৮.৪১%। বিবর্ণ মাসের হিসেবও। লকডাউনের পরে কর্মহীনতা বেড়েছে সর্বত্র। তবে কামড় শহরে বেশি তীব্র। দেশ স্তব্ধ হওয়ার পরের দু’সপ্তাহে সেখানে তা ৩০% ছাড়িয়েছে। গ্রামে প্রায় ২১%। অর্থনীতিতে কাজ করা ও খোঁজা মিলিয়ে শ্রমিকের অনুপাতও মার্চে এই প্রথম নেমেছে ৪২ শতাংশের নীচে।
সিএমআইই মানছে, লকডাউনের জন্য এ বার সমীক্ষা হয়েছে তুলনায় কম জনের সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু তা বেশি হলেও দেশে কাজের বাজারের কঙ্কালসার ছবি কতটা বদলাত, তা নিয়ে সন্দিহান বিশেষজ্ঞেরা। যুক্তি, এমনিতেই অর্থনীতি ঝিমোনোয় মাথা তুলছিল বেকারত্ব। ২২ মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহ ও ফেব্রুয়ারির পরিসংখ্যানে তা স্পষ্ট। তার উপরে এখন পুরো দেশের অর্থনীতির চাকা আটকে। এর খেসারত কত দিন ধরে কত জনকে দিতে হবে, তা নিয়ে শঙ্কিত তাঁরা।
বিভিন্ন সর্বভারতীয় কর্মী সংগঠন অভিযোগ তুলেছে, লকডাউন হতেই বহু কর্মী কাজ হারিয়েছেন। বলেছে, সংস্থার কাজ বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিদায় করা হয়েছে ওই ঠিকাকর্মীদের। যাঁরা ‘দিন আনি-দিন খাই’ কর্মী, এই লকডাউনের বাজারে হাতে কাজ নেই তাঁদের। কাজ হারানোর আশঙ্কায় সংগঠিত শিল্পের বহু কর্মীও। তা-সে প্রধানমন্ত্রী যতই কাজ না-ছাঁটার আবেদন করুন বা সে বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করুক কেন্দ্র। তাই লকডাউন চলাকালীন যে বেকারত্বের হার রকেট গতিতে বাড়বে, তাতে আশ্চর্য নন বিশেষজ্ঞেরা। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির দাবি, গত দু’সপ্তাহে চাকরি হারিয়েছেন ৫ কোটি ভারতীয়। আইএলও-র ইঙ্গিত, করোনা সঙ্কট দেশে অসংগঠিত ক্ষেত্রের প্রায় ৪০ কোটি মানুষকে আরো দারিদ্রের অন্ধকারে ঠেলে দেবে।