প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে দেশে পেট্রল-ডিজেলের দর থমকে। চড়া দরের আঁচে নাভিশ্বাস উঠছে আমজনতার। পরিবহণ খরচ বাড়ায় পণ্যের দাম ফের বাড়ছে। এই অবস্থায় উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে সাধারণ মানুষ ও শিল্পকে অবিলম্বে দামে সুরাহা দেওয়া দূর অস্ত্, তেলে জিএসটি প্রসঙ্গে কার্যত ধোঁয়াশা তৈরি করে দিল কেন্দ্রই। সোমবার সংসদে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, পেট্রল-ডিজেল, রান্নার গ্যাস, বিমান জ্বালানির মতো পেট্রোপণ্যকে জিএসটির আওতায় আনার প্রস্তাব নেই। কবে তা হবে, ঠিক সময় এলে তা সেই সুপারিশ করবে জিএসটি পরিষদ। অথচ এই নির্মলাই কিছু দিন আগে বলেছিলেন কেন্দ্র-রাজ্য একমত হলে তা সম্ভব। এমনকি পেট্রোপণ্যকে জিএসটিতে আনার আর্জি জানান তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। যুক্তি, তা হলেই এগুলির দাম কমবে।
ফলে এ দিন প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি তেল নিয়ে কার্যত দিশাহীন কেন্দ্র? আমজনতা ও শিল্পের ক্ষোভের মুখে দাঁড়িয়েও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছে না? নাকি সূত্রের দাবি অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের আরও মুখে এসে দাম ছাঁটার রাস্তা খুলে রাখা হচ্ছে?
এ দিন সংসদেই অর্থপ্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেছেন, এক বছরে পেট্রল-ডিজেলে কেন্দ্রীয় শুল্ক লিটারে বেড়েছে যথাক্রমে ১৩ ও ১৬ টাকা। পরিসংখ্যান বলছে, তেল রেকর্ড গড়ার প্রভাব পড়েছে পণ্য পরিবহণে। ফলে চড়ছে মূল্যবৃদ্ধি। সে কথা মেনেছেন ঠাকুর। বলেছেন, গত বছর জানুয়ারি থেকে এ বছর জানুয়ারি পর্যন্ত গাড়িতে ব্যবহৃত পেট্রলের দাম বাড়ায় মূল্যবৃদ্ধি ৭.৩৮% থেকে বেড়ে হয়েছে ১২.৫৩%। ডিজেলে ৬.৪৪% থেকে ১২.৭৯%। একাংশের মতে, তেলে শুল্ক থেকে বিপুল আয় করে রাজ্যগুলিও। ফলে তাতে জিএসটি চায় না তাদের অনেকে। সে জন্যই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা কর কমানোর বল ঠেলছেন রাজ্যের ঘাড়ে। নাকাল হচ্ছেন মানুষ।