প্রতীকী ছবি।
চলতি বছরে (২০২২) ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৭% থেকে এক ধাক্কায় ৪.৬ শতাংশে নামিয়ে আনল রাষ্ট্রপুঞ্জ (ইউএন)। এক রিপোর্টে ইউএন কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ইউএনসিটিএডি) এর জন্য রাশিয়ার ইউক্রেনে যুদ্ধ, তার জেরে জ্বালানির জোগান ব্যাহত হওয়া, দাম বৃদ্ধি, রাশিয়ার উপরে পশ্চিমী দেশগুলির আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপানোর বিরূপ প্রভাব, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, পরিস্থিতি যুঝতে বিভিন্ন দেশের কঠোর নীতি, আর্থিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতার অভাবকে দায়ী করেছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, যুদ্ধ এবং তার জেরে বিভিন্ন দেশ আর্থিক নীতিতে বদল আনায় মূলত ভারতের মতো সম্ভাবনাময় অর্থনীতির ঝুঁকি বেড়েছে। বস্তুত এই সব দেশকে নিয়েই তাদের উদ্বেগ বেশি। বিশেষত কেউ যদি খাদ্য এবং জ্বালানির জন্য আমদানি নির্ভর হয়। বাড়তে থাকা খাদ্য এবং জ্বালানির দাম তাদের সামনে বিরাট চ্যালেঞ্জ। তাদের মতে, অতিমারির কারণে একেই এই সব দেশের বহু সাধারণ আয়ের পরিবার দেনায় ডুবেছে। ঋণ বেড়েছে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার। তার উপরে যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে জ্বালানি এবং প্রাথমিক পণ্যের বাজার কার্যত আগুন। ফলে ওই সব সাধারণ রোজগেরে মানুষের সংসার খরচ বেড়েছে। জীবনযাপনই কঠিন হয়ে গিয়েছে, লগ্নি-সঞ্চয়ের উৎসাহ কমছে। যে সব পরিবার আয়ের বেশির ভাগটা খাবারে খরচ করত, তাদের অনেকেই গরিব হয়ে গিয়েছে। বেড়েছে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা। যে কারণএই বছর বিশ্ব অর্থনীতির আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাসও ৩.৬% থেকে কমিয়ে ২.৬% করেছে তারা।
আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাই
কেন্দ্রীয় সংস্থা এনএসও
• ৮.৯% (চলতি অর্থবর্ষে*, আগে বলেছিল ৯.২%)
মুডি’জ়
• ৯.১% (চলতি বছরে**, আগে বলেছিল ৯.৫%)
রাষ্ট্রপুঞ্জ
• ৪.৬% (চলতি বছরে, আগে বলেছিল ৬.৭%)
* ২০২১-২২ ** ২০২২
ইউএনসিটিএডি-র রিপোর্ট বলছে, ইউক্রেনকে আক্রমণের জন্য পশ্চিমী দেশগুলির আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে এই বছর রাশিয়া গভীর মন্দায় ডুবতে পারে। সঙ্কোচনের হার হতে পারে ২.৩-৭.৩ শতাংশ। পশ্চিম ইউরোপ এবং মধ্য, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বহু দেশে আর্থিক বৃদ্ধির হার চোখে পড়ার মতো শ্লথ হতে পারে। তবে দক্ষিণ এবং পশ্চিম এশিয়ার বাকি কিছু অঞ্চলের অর্থনীতি দ্রুত জ্বালানির দাম এবং চাহিদা বৃদ্ধির জেরে সুবিধা ভোগ করবে। যদিও তাদের অগ্রগতি ব্যাহত হতে পারে প্রাথমিক পণ্যের বাজারে কিছু বিরূপ প্রভাব পড়ায়, বিশেষত খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জেরে। আমেরিকায় আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৩% থেকে ২.৪ শতাংশে নামিয়েছে তারা। চিনে ৫.৭% থেকে ৪.৮ শতাংশে।
সম্প্রতি বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছেঁটেছে মুডি’জ়ও। তাদের বক্তব্য, তেল ও সার আমদানির খরচ মেটাতে গিয়ে টান পড়বে কেন্দ্রের মূলধনী খরচে।