ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে চড়া আমদানি শুল্ক চাপানোর যে অস্ত্র সম্প্রতি প্রয়োগ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তাঁর প্রথম নিশানা যে চিনই, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন প্রশাসন সূত্রের ইঙ্গিত, এ বার আমেরিকার বাজারে ঢোকা ১০০টিরও বেশি চিনা পণ্যে আরও বড় অঙ্কের কর চাপানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। লক্ষ্য মূলত বৈদ্যুতিন, তথ্যপ্রযুক্তি, টেলি-যোগাযোগ সংক্রান্ত পণ্য। তবে আসবাব, খেলনা ইত্যাদি যুক্ত হয়ে সেই তালিকা আরও বড় হতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
আগামী সপ্তাহেই এই ঘোষণা হতে পারে বলে সূত্র ইঙ্গিত দিলেও, এ নিয়ে হোয়াইট হাউস কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। তবে সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, ওয়াশিংটন এই মুহূর্তে মূলত চিনা প্রযুক্তি সংস্থাগুলিকেই শায়েস্তা করতে চাইছে। সে জন্যই এই তোড়জোড়। কারণ, তাদের বিরুদ্ধে মেধাস্বত্ব চুরির অভিযোগ তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে বেজিংয়ের লগ্নি নীতি অনুযায়ী, মার্কিন সংস্থাগুলি তাদের প্রযুক্তির গোপন তথ্য সে দেশের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হচ্ছে সেখানে ব্যবসা করতে সায় পাওয়ার শর্ত হিসেবে। যা মেনে নিতে পারছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ঠিক এই কারণেই সম্প্রতি চিপের বাজারে চিনা আধিপত্য ঠেকাতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তিনি। সিঙ্গাপুরের সংস্থা ব্রডকমের প্রস্তাব ছিল মার্কিন চিপ তৈরির সংস্থা কোয়ালকম অধিগ্রহণের। ট্রাম্পের যুক্তি, কোয়ালকম এশীয় সংস্থার হাতে গেলে, ক্ষতি আমেরিকার। কারণ সে ক্ষেত্রে ওই লোভনীয় বাজার কব্জা করবে চিনা সংস্থা। অনেকের মতে, যা হুয়েই। সেই জুজুতেই ট্রাম্প এই অধিগ্রহণে ছাড়পত্র দেওয়ার বিরোধী।
আশঙ্কা জোরালো
• চিনের ১০০টিরও বেশি পণ্যে আরও কড়া শুল্ক চাপানোর ইঙ্গিত আমেরিকার।
• দুই মার্কিন সংস্থা গুগ্ল ও অ্যাপলের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুমকি দিল ফ্রান্স। অভিযোগ, অবাধ বাণিজ্যের নিয়ম না মানা।
• কানাডার এক ধরনের কাগজে শাস্তিমূলক আমদানি শুল্ক বসাবে ওয়াশিংটন।
ট্রাম্পকে ইউরোপ
• ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলল, বাণিজ্য যুদ্ধের ঝুঁকি না নিয়ে বরং লক্ষ্য হোক আরও বেশি সহযোগিতাই।
• ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়ামে শুল্ক ছাড়ের আলোচনা চালানো হবে।
• একই সঙ্গে প্রস্তুতি নেওয়া হবে আমেরিকার পণ্যে কর চাপিয়ে পাল্টা চাপ তৈরিরও।
এ দিনই অবশ্য হুয়েই জানিয়েছে, আমেরিকার বাজারে লগ্নি চালিয়ে যাবে তারা। যদিও চেষ্টা সত্ত্বেও সেখানে বিক্রি বাড়েনি সংস্থাটির। এর আগে সে দেশের বাজার দখলে তারা মার্কিন বহুজাতিক এটিঅ্যান্ডটি-র সঙ্গে চুক্তি সই করলেও, তা খারিজ হয় সরকারের চাপে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ট্রাম্প সরকারের প্রতি হুয়েই কর্তার কটাক্ষ, ‘‘ওরা খুব বেশি বিচলিত। এত স্নায়ুর চাপে কেন ভুগছে জানি না।’’