পতনের ফাঁদেই রফতানি। অগস্টে তা এক ধাক্কায় সরাসরি কমেছে ২০.৬৬ শতাংশ। টানা ন’মাস ধরে সঙ্কুচিত হতে থাকা রফতানি বাজারের হাল না-ফেরায় উদ্বিগ্ন শিল্পমহল অবিলম্বে কম সুদে রফতানি ঋণের সুবিধা বহাল রাখার জন্য নতুন করে দাবি জানিয়েছে। এর আগে রফতানি শেষ বার বেড়েছিল (৭.২৭ শতাংশ) ২০১৪ সালের নভেম্বরে।
রফতানি তলানিতে ঠেকার কারণও চিহ্নিত করেছে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল, যার মধ্যে রয়েছে:
• বিশ্ব বাজারে চাহিদায় টান
• কৃষি ও শিল্পে তৈরি পণ্যের দাম কমতে থাকা
• নতুন বাজার তৈরিতে ভারতের পিছিয়ে পড়া
মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রক প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, অগস্টে রফতানি কমে দাঁড়িয়েছে ২১২৬ কোটি ডলার। আমদানিও অবশ্য অগস্টে ৯.৯৫ শতাংশ কমে হয়েছে ৩৩৭৪ কোটি ডলার, যার প্রধান কারণ লাফিয়ে বাড়তে থাকা সোনা আমদানি। সোনার দাম নেমে আসায় অগস্টে মূলত গয়না শিল্পের চাহিদা মেটাতে সোনা আমদানি গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১৪০ শতাংশ। ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্বেগ বাড়িয়ে বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি বেড়ে ছুঁয়েছে ১২৪৭ কোটি ডলার। আগের বছরের এই সময়ে ঘাটতি ছিল ১০৬৬ কোটি ডলার। জুলাইয়ে অবশ্য তা ছিল ১২৮১ কোটি ডলার।
রফতানির হাল ফেরাতে তাই অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে রফতানিকারীদের সংগঠন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশন্স (ফিও)। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট এস সি রলহান বলেন, ‘‘কম সুদে রফতানি ঋণ দেওয়ার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত এখনই কেন্দ্রের নেওয়া উচিত। রফতানির এই অবাধ পতন ঠেকাতে একটি পথনির্দেশও ঘোষণা করতে হবে।’’ ইঞ্জিনিয়ারিং রফতানিকারীদের সংগঠন ইইপিসি ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান অনুপম শাহ বলেন, ‘‘আমরা অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে সরকারকে রফতানি বাড়ানোর পথ খুঁজতে হবে।’’
চিরাচরিত ভাবে যে-সব পণ্য রফতানিতে ভারতের সুনাম রয়েছে, সেগুলিও সঙ্কুচিত হয়েছে বলে এ দিন জানিয়েছে সরকারি পরিসংখ্যান। যেমন: ইঞ্জিনিয়ারিং সামগ্রীর রফতানি কমেছে ২৯ শতাংশ, চামড়া ও চর্মজাত সামগ্রী প্রায় ১৩ শতাংশ, সমুদ্রজাত পণ্য ২১ শতাংশ, গালিচা ২২ শতাংশ, পেট্রোপণ্য রফতানি ৪৮ শতাংশ। নতুন বাজারও সে বাবে গড়ে ওঠেনি। চাহিদা কম থাকায় রফতানির পরিমাণ কমার পাশাপাশি রফতানি খাতে আয়ও কমেছে বিশ্ব জুড়ে পণ্যমূল্য নেমে আসার কারণে। ফলে কমে গিয়েছে মোট রফতানির অঙ্ক।
এপ্রিল থেকে অগস্ট, এই ৫ মাসে রফতানি ১৬.১৭ শতাংশ কমে হয়েছে ১১,১০৯ কোটি ডলার। আমদানি ১১.৬১ শতাংশ কমে ১৬,৮৬০ কোটি ডলার। বাণিজ্য ঘাটতি ৫৭৫০ কোটি ডলার।