চিনে করোনাভাইরাসের হামলায় বেসামাল ভারতের পর্যটন শিল্পও।
অতীতে সার্সের মতো মারণ ভাইরাসের প্রকোপে পর্যদুস্ত হয়েছিল পর্যটন। কোনও দেশে রাজনৈতিক-সামাজিক অস্থিরতা দানা বাঁধলেও মার খায় এই শিল্প। যেখানে সমস্যা দানা বাঁধে, সেখানে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা জারি (ট্র্যাভেল অ্যাডভাজ়রি) করে অন্যান্য দেশ। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে সম্প্রতি ভারত জুড়ে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু হওয়ায় যে সতর্কতা নিয়েছিল আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, সিঙ্গাপুরের মতো দেশ। ইতিমধ্যেই তাতে ধাক্কা খেয়েছে বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ সূচি এবং তার হাত ধরে ভারতীয় পর্যটন সংস্থাগুলির ব্যবসাও। এ বার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনাভাইরাস।
সংশ্লিষ্ট মহলের খবর, এই সমস্যা দু’ভাবে বিপদে ফেলছে এ দেশের পর্যটন সংস্থাগুলিকে। ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব টুর অপারেটর্সের প্রেসিডেন্ট প্রণব সরকার বলছেন, প্রথমত, চিনের পর্যটকেরা ভারত সফর বাতিল করছেন। কারণ, বেজিং নাগরিকদের বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা জারি করেছে। ফলে ব্যবসা হারাচ্ছে পর্যটন সংস্থাগুলি। বিশেষত এই সময় তাঁদের নববর্ষের ছুটি কাটাতে যেহেতু চিনা পর্যটকেরা ভারত-সহ নানা দেশে যান। দ্বিতীয়ত, ভারতীয় পর্যটকেরাও চিনে যাওয়া বাতিল করছেন। একই কথা জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অব ডোমেস্টিক টুর অপারেটর্স অব ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট পি পি খান্না।
আউটবাউন্ড টুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন্স অব ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট রিয়াজ মুন্সী জানান, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, তাইল্যান্ডের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গন্তব্যে সফর বাতিল হচ্ছে। খান্নার দাবি, ‘‘এমনকি দিল্লির এক দম্পতি উত্তর-পূর্ব ভারতেও বেড়ানো বাতিল করেছেন। কারণ সেটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কাছে।’’ সব মিলিয়ে লোকসানে ডুবছে দেশের পর্যটন শিল্প। ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবী বলেন, কলকাতা বিমানবন্দর থেকে তাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, দুবাইয়ের পরে চিনেই যান বেশি পর্যটক। অনেকে যান ব্যবসার কাজেও। বিপন্ন সব বাজারই।
পর্যটন কর্তাদের আশঙ্কা, আসন্ন গ্রীষ্মেও ভাইরাসের হামলা বহাল থাকলে লোকসান আরও বাড়বে। কারণ, ওই সময়েই চিন ঘুরতে ভালবাসেন অনেক ভারতীয়।