প্রতীকী ছবি।
করোনার জেরে লকডাউনে বাতিল হয়েছে ভ্রমণ। ফলে চূড়ান্ত সঙ্কটে পড়েছে পর্যটন সংস্থাগুলি। এক দিকে, হোটেল-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্র তাদের জমা দেওয়া অর্থ ফেরাতে পারছে না। অন্য দিকে, পুরো বা আংশিক বুকিংয়ের টাকা ফেরত চাইছেন পর্যটকদের অনেকে। সংস্থাগুলির দাবি, কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে বারবার আর্জি জানিয়েও কার্যত সুরাহা মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে পর্যটকদের কাছে বাতিল হওয়া ভ্রমণসূচি এক বছরের মধ্যে বদলের (রিশিডিউল) প্রস্তাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সংশ্লিষ্ট শিল্পের তিন সংগঠন। তাদের বক্তব্য, আর্থিক সঙ্কটে তারা বুকিংয়ের অর্থ এখনই নগদে ফেরত দিতে পারছে না। তাই পর্যটক ফের এর মধ্যে ওই জায়গায় বেড়াতে গেলে নতুন খরচের ক্ষেত্রে আগাম মেটানো অর্থ ব্যবহার করা যাবে।
দেশে আনলক-১ পর্ব শুরু হলেও, পর্যটন ব্যবসা কবে ঘুরে দাঁড়াবে তা নিয়ে সংশয়ী শিল্প মহল। তবে এর মধ্যেই গাড়ি নিয়ে ধারেকাছে ঘোরার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন শিল্পকর্তারা। কিন্তু পর্যটকদের একাংশের আবার বক্তব্য, আগাম বুকিংয়ে অনেক টাকা আটকে রয়েছে। কবে আবার আগের মতো বেড়ানো যাবে, তা নিয়ে সংশয় থাকছে। তাই বাতিল হওয়া ভ্রমণের আগাম মেটানো অর্থ ফেরতের দাবি তুলছেন তাঁরা। ওই সব পর্যটকদের এক বছরের মধ্যে নতুন ভ্রমণসূচি তৈরির প্রস্তাব দিচ্ছে ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল (টাব), হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক এবং ইস্টার্ন হিমালয়াজ় ট্রাভেল অ্যান্ড টুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন।
তাদের পক্ষে টাবের সেক্রেটারি নীলাঞ্জন বসুর দাবি, রাজ্য পর্যটন নিগম বা বিভিন্ন হোটেলের কাছ থেকে তাঁরা বুকিংয়ের টাকা নগদে ফেরত পাচ্ছেন না। অনেকেই সেটা বড়জোড় পর্যটন সংস্থার ওয়ালেটে জমা রাখছে। তাই তাঁদেরও হাত-পা বাঁধা। পর্যটন কেন্দ্র খুললেও এখনই কতটা ব্যবসা হবে, নিশ্চিত নয়। অথচ কর্মীদের বেতন-সহ নানা স্থায়ী খরচ বইতে হচ্ছে। তাই নগদ ফেরতের বদলে সূচি বদলের কথা বলছেন তাঁরা। শিল্পের আর্জি, ব্যবসার হাল ফেরাতে সময় দরকার।
তবে একই জায়গায় পরে যেতে চাইলে সেই সময় সেখানে বুকিং মিলবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। তাই অন্তত তিন মাস আগে পরিবর্তিত সূচি তৈরির প্রস্তাব দিচ্ছে সংগঠনগুলি। যদি কেউ বন্ধু বা আত্মীয়কে সেই বুকিং হস্তান্তর করতে চান, সেই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হবে। তেমনই বিকল্প জায়গায় যেতে চাইলে আর সে জন্য বাড়তি খরচ লাগলে ও পর্যটক তা দিতে রাজি হলে, তা-ও শর্ত সাপেক্ষে খতিয়ে দেখা হতে পারে। তবে নীলাঞ্জনবাবুর আশ্বাস, যে সুনামের সঙ্গে তাঁরা ব্যবসা করেন, তার সঙ্গে সংস্থা আপস করবে না।
সেই সঙ্গে পর্যটন শিল্পের জন্য রাজ্য ও কেন্দ্রের কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছে সংগঠনগুলি। না-হলে বিপুল কর্মসংস্থানের সূত্র এই শিল্পের অবস্থা খারাপ হবে বলেই দাবি তাদের।