পঞ্চবার্ষিকী যোজনার বদলে এ বার ১৫ বছরের আগাম পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে চায় কেন্দ্র। আর, তারই অঙ্গ হিসেবে রাজ্যগুলির মতামত নিয়ে তৈরি হচ্ছে তিন বছরের কর্মসূচি।
যোজনা কমিশনের জমানায় চালু থাকা চিরাচরিত পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা থেকে সরে এসেই ১৫ বছরের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ নিয়ে এগোতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। তারই আওতায় তিন বছরের ওই ‘অ্যাকশন অ্যাজেন্ডা’ চূড়ান্ত করতে বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। যার মূল লক্ষ্যই হল, দেশের মানুষের চাকরির সুযোগ তৈরি।
সরকারি সূত্রের খবর, এর আগে এপ্রিলে নীতি আয়োগের পরিচালন পর্ষদের বৈঠকেই তিন বছরের কর্মসূচির খসড়া মুখ্যমন্ত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই অধিকাংশ রাজ্য তাদের মতামত জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার আর একবার কথা বলে নিলেই তিন বছরের এই কর্মসূচির চূড়ান্ত চেহারা নেওয়ার কথা।
নীতি আয়োগের মতে, দেশের রোজগেরে মানুষের ৫০ শতাংশই কৃষির উপর নির্ভরশীল। অথচ কৃষি থেকে আসে জাতীয় আয় বা জিডিপি-র মাত্র ১৫%। এর অর্থ, কৃষি থেকে শ্রমিকদের সরিয়ে অন্য ক্ষেত্রে নিয়ে যেতে হবে। একই সঙ্গে কৃষিতে যাঁরা থেকে যাবেন, তাঁদের জন্য উৎপাদন ও আয়ের রাস্তা বাড়াতে হবে।
তবে সমস্যা হল, ৭২% শ্রমিকই ক্ষুদ্র-মাঝারি সংস্থায় কাজ করেন, যেখানে শ্রমিক সংখ্যা ২০ জনেরও কম। এই শিল্প থেকে মোট কারখানার উৎপাদনের মাত্র ১২% তৈরি হয়। পরিষেবা ক্ষেত্রেও ৪০% আসে ২% কর্মীর হাত ধরে, যাঁরা বড় সংস্থায় কাজ করেন। নীতি আয়োগের এক কর্তা বলেন, ‘‘এর অর্থ হল, কৃষি, কারখানা, পরিষেবা, তিনটি ক্ষেত্রেই উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সংস্কার দরকার। যাতে আরও বেশি চাকরির সুযোগ তৈরি হয়।’’
কৃষি উৎপাদন বাড়াতে ৩ বছরের কর্মসূচিতে বলা হয়েছে, উচ্চফলনশীল বীজ, অত্যাধুনিক সেচ ব্যবস্থা জরুরি। কারখানা ক্ষেত্রের জন্য দাওয়াই, উপকূলবর্তী এলাকায় আর্থিক অঞ্চল গড়ে তোলা। সেখানে শিল্পে ব্যবহারের উপযোগী যথেষ্ট জমি পড়ে রয়েছে বলে মত নীতি আয়োগের বিদায়ী উপাধ্যক্ষ অরবিন্দ পানাগাড়িয়ারও।