Migrant

পরিযায়ী শ্রমিকের কোনও তথ্যই নেই শ্রম দফতরে

রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের ব্যাপারে তাদের হাতে যে তথ্যই নেই, তা কার্যত মেনে নিচ্ছে শ্রম দফতর।

Advertisement

প্রকাশ পাল

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২২ ০৭:০৯
Share:

ফেরা: বাড়ির পথে পরিযায়ী শ্রমিক। দু’বছর আগে করোনার লকডাউনে। ফাইল চিত্র

গত ১০ বছরে পশ্চিমবঙ্গে কত জন পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন ও তাঁদের বছর ভিত্তিক তালিকা, কোনওটাই দিতে পারল না শ্রম দফতর। তথ্য জানার অধিকার আইনে তাদের কাছে এগুলি জানতে চেয়েছিলেন শুভ্রকান্তি সামন্ত নামে হুগলির এক আইনজীবী। বরং রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের ব্যাপারে তাদের হাতে যে তথ্যই নেই, তা কার্যত মেনে নিচ্ছে দফতর। সম্প্রতি শুভ্রকান্তির প্রশ্নের উত্তরে তারা জানিয়েছে, দফতরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ কোনও পরিযায়ী শ্রমিককে শনাক্ত করেনি।

Advertisement

আন্তঃরাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক আইন কার্যকর করতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, এই তথ্য চন্দননগরের সংস্থা ‘আইন সহায়তা কেন্দ্র’ গত ফেব্রুয়ারিতে লিখিত ভাবে জানতে চেয়েছিল রাজ্য শ্রম দফতরের কাছে। এ ব্যাপারেও শুভ্রকান্তি জানতে চান। জবাবে দফতর বলেছে, এমন চিঠির কথা সংশ্লিষ্ট বিভাগের জানা নেই। এ নিয়ে ওই দফতরের থেকে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ফোন এবং মোবাইল-বার্তার জবাবও আসেনি।

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট আইন (ইন্টার-স্টেট মাইগ্রান্ট ওয়ার্কমেন অ্যাক্ট, ১৯৭৯) রয়েছে। ওই আইন অনুযায়ী তাঁদের তথ্য রাজ্য ও কেন্দ্র যাতে সংগ্রহ করে, দীর্ঘ দিন ধরেই সেই দাবি জানিয়ে আসছে চন্দননগরের সংগঠনটি। কিন্তু, তাদের একের পর এক চিঠিতেও কেন্দ্র বা রাজ্য উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ। করোনা পরিস্থিতির পরে সরকার কিছুটা নড়ে বসে। ওই আইন কার্যকর করতে বিভিন্ন রাজ্যের শ্রম দফতরকে আর্জি জানায় কেন্দ্র। গত জুলাইয়ে এ রাজ্যের শ্রম দফতরের তরফে বলা হয়, অন্য রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের বিস্তারিত বিবরণ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর ফলে তাঁরা খাদ্যের নিশ্চয়তা পাবেন। ‘এক দেশ, এক রেশন’ ব্যবস্থার সুফল মিলবে।

Advertisement

আইন সহায়তা কেন্দ্রের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আইনজীবী শুভ্রকান্তি সামন্তের চিঠির যে উত্তর শ্রম দফতর দিয়েছে তাতে স্পষ্ট, পরিযায়ী শ্রমিকদের কোনও তথ্য তাদের হাতে নেই। আগে যে কথা তারা বলেছিল, নিশ্চয়ই ঠিক ছিল না।’’

ইটভাটা, চটকল, পাথরখাদান প্রভৃতি শিল্পে কাজের জন্য ভিন্‌ রাজ্য থেকে বহু মানুষ পশ্চিমবঙ্গে আসেন। গয়না, রাজমিস্ত্রির কাজে বহু মানুষ পশ্চিমবঙ্গের নানা জেলা থেকে অন্য রাজ্যে যান। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, পরিযায়ী শ্রমিকদের তথ্য রাজ্যের কাছে থাকলে তাঁদের সুবিধা। প্রয়োজনে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের পরিষেবা দেওয়া সহজ হবে।

বিশ্বজিৎবাবুর বক্তব্য, আইনে রয়েছে শিল্প বা কল-কারখানায় অন্য রাজ্যের শ্রমিক নিয়োগ করা হলে, শ্রম দফতরের সায় নিতে হবে। কিন্তু আইন তৈরির চার দশক পরেও পরিযায়ী শ্রমিকের সুনির্দিষ্ট সংখ্যাই রাজ্য বা কেন্দ্রের জানা নেই। শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি, তাঁর সন্তানের পড়াশোনার বন্দোবস্ত-সহ সুরক্ষার কথাও আইনে বলা আছে। বাস্তবে, কিছুই নেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement