রাজ্যের সরকারি দফতরে প্রতি বছর কত বৈদ্যুতিন বর্জ্য তৈরি হয়, তার কোনও তথ্যই নেই পরিবেশ দফতর বা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে।
বণিকসভা বেঙ্গল চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-র সভায় এ কথা মানলেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র। তাঁর মতে, ওই বর্জ্য সামলাতে আইআইটি-র মতো বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন। এ নিয়ে ভাবনা-চিন্তাও করছেন তাঁরা।
মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ইত্যাদি সরঞ্জাম ও সেগুলির যন্ত্রাংশ বাতিল করা হলে বৈদ্যুতিন বর্জ্যে পরিণত হয়। প্রতিদিন তা তৈরি হলেও, নষ্ট বা পুনর্ব্যবহার করা নিয়ে এ দেশে তেমন সচেতনতা নেই। আর পাঁচটা বর্জ্যের মতোই তা ভাগাড়ে ফেলা হয়। অথচ পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৈদ্যুতিন বর্জ্যে সীসা, পারদ, ক্ষতিকর অ্যাসিডের মতো বিষাক্ত রাসায়নিক থাকে। ভাগাড়ে ফেললে মাটিতে মেশে। ভূগর্ভে ঢুকে জলস্তরকেও বিষিয়ে দিতে পারে।
দেশে বছরে ১৭ লক্ষ টন বৈদ্যুতিন বর্জ্য তৈরি হয়, যার একটা বড় অংশ এ রাজ্যের। অথচ এখানে সেগুলি নষ্ট করার পদ্ধতি নেই বললেই চলে। দেশের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধি মেনে এ রাজ্যে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য আলাদা করার পদ্ধতিও চালু হয়নি।
কল্যাণবাবু জানান, এ ব্যাপারে পুরসভাগুলিকে সচেতন করা হচ্ছে। তবে দায়িত্ব নিতে হবে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম তৈরির সংস্থাকে। সচেতন হতে হবে নাগরিকদের। তবে প্রশ্ন উঠেছে, পরিকাঠামো না-থাকলে তাঁরা বর্জ্য কোথায় ফেলবেন? সমস্যা টের পেয়েছেন পর্ষদ চেয়ারম্যানও। তাঁর অফিসের বাতিল মোবাইল এখনও ড্রয়ারেই রাখা। বর্জ্য সামলানোর পরিকাঠামো রাজ্যে যে নেই, তা কার্যত মেনেছেন পর্ষদ চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, শুধু দু’নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে ছ’টি ভাগাড় আছে। কয়েকটি এত পুরনো যে, ভূগর্ভের জলস্তরে পৌঁছতে পারে দূষণ। সমস্যা মেটাতে তিনি বিভিন্ন পুরসভার সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু জমি ও অর্থের অভাবেই নতুন ভাগাড় তৈরি আটকে।