অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। —ফাইল ছবি।
নোটবন্দি, জিএসটি রূপায়ণ এবং অতিমারির ফলে যে সমস্ত ক্ষেত্র সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছিল, সেগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই)। এই নিয়ে একাধিক বার ক্ষোভও প্রকাশ করেছে তারা। এ বার তাদের পুঁজি জোগাতে একাধিক প্রস্তাব রয়েছে বাজেটে। কিন্তু সেই সুবিধা আদৌ কতটা ঠিক জায়গায় পৌঁছবে, তা নিয়ে সন্দিহান রাজ্যের ছোট শিল্পমহলের একাংশ।
মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘‘শর্তসাপেক্ষে মুদ্রা ঋণের ‘তরুণ’ খাতে ঋণের ঊর্ধ্বসীমা ১০ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ২০ লক্ষ টাকা করা হল। উৎপাদন ক্ষেত্রের সংস্থাগুলি ক্রেডিট গ্যারান্টি প্রকল্পের আওতায় ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বন্ধকবিহীন ঋণ পেতে পারে।’’ এ ব্যাপারে বণিকসভা সিআইআইয়ের এমএসএমই কমিটির প্রধান রবি টোডি বলেন, ‘‘এই দুই সিদ্ধান্তে দেশের কয়েক লক্ষ ছোট সংস্থা উপকৃত হবে।’’ শিল্পপতি সঞ্জয় বুধিয়ার কথায়, ‘‘ই-কমার্স রফতানি হাব তৈরি হলে অনেক শিল্পী উপকৃত হবেন।’’ তবে সংশয়ের মেঘ রাজ্যের শিল্পাঞ্চলগুলিতে। আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের শিল্পোদ্যোগীদের একাংশের দাবি, গত বাজেটেও এমন প্রকল্পের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু লাভ কিছু হয়নি। দুর্গাপুর স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ় অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা সুব্রত লাহার অভিযোগ, ‘‘বিশেষ প্রভাবশালী কেউ হয়তো এর সুবিধা পেয়েছেন। কিন্তু সাধারণ শিল্পোদ্যোগীরা পাননি।’’
ছোট শিল্পকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতা বেড়েছে সিডবির। অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা, দেশের ২৪টি শিল্পতালুকে ঋণ দেওয়ার জন্য খোলা হবে সিডবির শাখা। রাজ্যগুলির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দেশের ১০০টি শহরে ছোট শিল্পতালুক এবং জাতীয় শিল্প করিডর বরাবর ১২টি শিল্পতালুক গড়া হবে। ছোট শিল্প সংস্থাগুলির সংগঠন ফসমির সভাপতি বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সহজে ঋণ, ছোট শিল্পের পণ্য বিক্রির জন্য ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ও নতুন শিল্পতালুক তৈরির সিদ্ধান্ত ইতিবাচক।’’ বেঙ্গল চেম্বারের কর্তা ইন্দ্রনীল দত্তের কথায়, ‘‘উপকৃত হয়েছে ছোট শিল্প। কর্মসংস্থানকে জুড়ে দেওয়াও প্রশংসনীয়।’’
এ ছাড়া বিদেশি সংস্থাকে লগ্নিতে আকৃষ্ট করতে করের সীমা কমিয়ে ৩৫% করা হয়েছে। পরিকাঠামোয় বরাদ্দ ১১,১১,১১১ কোটি টাকা। যা ভারতের জিডিপির ৩.৪%। একে স্বাগত জানিয়েছে ইন্ডিয়ান চেম্বার। রাজ্যগুলির জন্য শর্তসাপেক্ষে দীর্ঘমেয়াদি সুদহীন ১.৫ লক্ষ কোটি ঋণের তহবিল ঘোষণা করেন নির্মলা।