ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
কথা মতোই বাণিজ্য সহযোগী মোট ৬০টি দেশের উপরে পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের ক্ষেত্রে যার হার ২৭%। তার পরেই শুরু হয়েছে কাঁটাছেঁড়া। শুল্কের অভিঘাত নিয়ে সন্দেহ, আশঙ্কা, তর্ক-বিতর্ক। একাংশের মতে, এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে তার হার কম। উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে অবস্থান তুলনায় ভাল। আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনাও চলছে। ফলে যতটা ধাক্কা আসবে বলে মনে হয়ছিল, ততটা আসেনি। খুব বেশি লাগার আশঙ্কাও নেই। কেউ কেউ এর মধ্যে ভারতের লাভের সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছেন। তবে অন্য এক অংশের মতে, আমেরিকার নতুন শুল্ক নীতির জেরে মার খাবে দেশের রফতানি বাণিজ্য। মাথা নামাবে আর্থিক বৃদ্ধি। খোদ আমেরিকাও ফের মূল্যবৃদ্ধি ফাঁদে পড়তে পারে। এমনকি বিশ্ব জুড়ে আর্থিক মন্দা ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে ট্রাম্পের শুল্ক বসানোর হঠকারী সিদ্ধান্ত জল ঢালতে পারে গোটা বিশ্ব অর্থনীতির চাঙ্গা হওয়ার প্রক্রিয়ায়। যার ফল এড়ানো মুশকিল ভারতের পক্ষেও।
বুধবার হোয়াইট হাউসের রোজ় গার্ডেনে ভারতীয় সময় মধ্যরাতে আমেরিকার নতুন জন্মের স্বপ্ন ফেরি করেন ট্রাম্প। বলেন, নতুন জীবন পাচ্ছে তাঁর দেশের শিল্প। দাবি করেন, সমস্ত দেশের পণ্যে আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির পদক্ষেপ আসলে আমেরিকায় উৎপাদনের কর্মকাণ্ড বাড়ানোর কৌশল। বিভিন্ন দেশ তাঁদের ব্যবহার করে ধনী হচ্ছে। চড়া হারে কর বসাচ্ছে তাঁদের পণ্যে। তাই এ বার তাঁর লক্ষ্য, পাল্টা চড়া শুল্কে সেই পথ আটকে আমেরিকার হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনা। প্রকৃত ‘স্বাধীনতা’ দেওয়া এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমানো।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘বন্ধু’ সম্বোধন করার পরেই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট মুখের হাসি ধরে রেখে অভিযোগ করেন, ভারত তাঁদের সঙ্গে ঠিক করেনি। ফলে শুল্ক চাপাতেই হচ্ছে তাঁকে। তবে ২৭% আমদানি শুল্কের প্রেক্ষিতে নয়াদিল্লির প্রতিক্রিয়া কী হয়, তাই নিয়ে জল্পনা ছিল আরও বেশি। কারণ ট্রাম্পের শুল্ক-হুমকির মুখে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পণ্যে আমদানি শুল্ক কমাতে বা তুলে নিতে শুরু করেছে কেন্দ্র। আরও সুবিধা দেওয়ার বার্তাও দিয়েছে। যাকে ট্রাম্প তোষণ বলে দুষছেন বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, তাঁরা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। বাণিজ্য মন্ত্রক শুল্কের ব্যাখ্যা দিলেও, তার থেকে বেশি কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। বিবৃতিতে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার কথা এবং সেই সঙ্গে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যের কথা।