Share Market

নিফটি বাড়ল মাত্র ৫.৩৪%, সোনা ২৬%! অনেক উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে শুরু হচ্ছে নতুন আর্থিক বছর

সোনায় যাঁরা টাকা ঢেলেছেন, তাঁরা এ বছর মোটা লাভের মুখ দেখেছেন। ধাতুটির দাম বেড়েছে প্রায় ২৬%। বেশ কয়েক দিন ডলারের নিরিখে অনেকটা পতনের পরে অবস্থা সামালেছে ভারতীয় মুদ্রা।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২৫ ০৬:৪৯
Share:

যাঁদের হাতে লগ্নিযোগ্য তহবিল আছে, তা তাঁরা সুদ কমার আগেই উপযুক্ত প্রকল্পে একটু বড় মেয়াদে লগ্নির পরিকল্পনা করতে পারেন। —প্রতীকী চিত্র।

ছ’মাস ধরে ক্রমাগত নামতে থাকা শেয়ার বাজার অর্থবর্ষের (২০২৫-২৬) শেষ কয়েক দিনে কিছুটা দম নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। গোটা বছরে সেনসেক্স উঠেছে ৩৭৬৪ পয়েন্ট বা ৫.১০%। আর নিফ্‌টি বেড়েছে ১১৯২ অঙ্ক (৫.৩৪%)। শতাংশের হিসাবে এই উত্থান ব্যাঙ্কের এক বছরের মেয়াদি আমানতের সুদের চেয়েও কম। যা স্বাভাবিক ভাবেই শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের লগ্নিকারীদের খুশি করতে পারেনি। তবে সোনায় যাঁরা টাকা ঢেলেছেন, তাঁরা এ বছর মোটা লাভের মুখ দেখেছেন। ধাতুটির দাম বেড়েছে প্রায় ২৬%। বেশ কয়েক দিন ডলারের নিরিখে অনেকটা পতনের পরে অবস্থা সামালেছে ভারতীয় মুদ্রা।

Advertisement

যথেষ্ট উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে কাল, মঙ্গলবার নতুন অর্থবর্ষ (২০২৫-২৬) শুরু হচ্ছে। বছরের দ্বিতীয় দিনেই ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপরে চড়া আমদানি শুল্ক বসাবে আমেরিকা। বাজার তাকে কী ভাবে নিচ্ছে তা কিছুটা স্পষ্ট হবে বুধবার। বিশ্বের বহু দেশ তো বটেই, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই শুল্কনীতির বিরূপ প্রভাব তাঁর নিজের দেশের অর্থনীতির উপরেও পড়বে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। আমেরিকার বেশ কয়েকটি শিল্প বিদেশি কাঁচামাল এবং যন্ত্রাংশের উপরে নির্ভরশীল। সেগুলিতে শুল্ক চাপলে তার বোঝা বইতে হবে আমেরিকার শিল্প সংস্থা এবং ক্রেতাদেরই। আর তার জেরে সে দেশের অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়লে তার প্রভাব পড়তে পারে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির উপরে।

আয়করের দিক থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এ বছর ঢালাও ছাড় মিলবে নতুন বা মূল কর কাঠামোয়। করছাড় বাবদ হাতে থাকবে ৩০,০০০ থেকে ১.১০ লক্ষ টাকা। সুতরাং কর সাশ্রয়ের জন্যে নয়, এ বার পরিকল্পনা করতে হবে এই টাকা খরচ অথবা লগ্নির কথা মাথায় রেখে।

Advertisement

বছরে যাঁদের মোট আয় ১২ লক্ষ টাকার মধ্যে, নতুন কাঠামোয় তাঁদের কোনও কর দিতে হবে না। এর ফলে করের আওতা থেকে বেরিয়ে যাবেন বিরাট সংখ্যক করদাতা। যাঁদের আয় ১৬ লক্ষ টাকার মধ্যে, তাঁদের বিভিন্ন স্তরে কর দিতে হবে ৫% থেকে ১৫% হারে। ব্যাঙ্ক, ডাকঘর এবং অন্যত্র জমার উপরে এখনও সুদের হার ভাল থাকায় বাজারের ঝুঁকি এড়িয়ে এই অংশের অনেকেই স্থির আয়ের প্রকল্পের দিকে ঝুঁকতে পারেন। অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন) ডাকঘরের বিভিন্ন স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সুদ অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি মাথা নামানোয় এপ্রিলের ঋণনীতি বৈঠকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ফের ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমাতে পারে। সুতরাং যাঁদের হাতে লগ্নিযোগ্য তহবিল আছে, তা তাঁরা সুদ কমার আগেই উপযুক্ত প্রকল্পে একটু বড় মেয়াদে লগ্নির পরিকল্পনা করতে পারেন। বড় মাপের সরকারি এবং বেসরকারি কয়েকটি ব্যাঙ্ক এখন মেয়াদি আমানতে প্রবীণ নাগরিকদের সর্বাধিক সুদ দিচ্ছে ৭.৭৫%-৭.৯%। অন্যেরা পেতে পারেন ৭-৭.৪ শতাংশের আশেপাশে। নতুন প্রজন্মের কয়েকটি ছোট ব্যাঙ্ক দিচ্ছে আরও বেশি। উল্লেখ্য, ব্যাঙ্কে এখন ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা বিমার আওতায় রয়েছে। যাঁরা অল্প ঝুঁকি নিয়ে বড় মেয়াদে সম্পদ গড়তে চান, তাঁরা এসআইপির পথ বাছতে পারেন। শেয়ারের দাম কমায় বেশ কিছু ভাল ফান্ডের ন্যাভও নেমেছে। এই বাজারে দফায় দফায় লগ্নি করা যায়।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement