—প্রতীকী ছবি।
কোভিডকালে ব্যবসায় যে লোকসান বইতে হয়েছিল, চার বছর পেরিয়েও সেই ক্ষত শুকোয়নি দেশের চর্মজাত পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে। নতুন করে ধাক্কা দিচ্ছে লোহিত সাগরের সমস্যা। কারখানার উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে সঙ্কট যোঝার চেষ্টা করছেন উৎপাদনকারীরা। চর্মজাত পণ্য পরিবেশ বান্ধব, এই প্রচারে জোর দিয়ে বিক্রি বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে দেশেও। ২৯ মার্চ এ জন্য কলকাতায় ‘ফ্যাশন শো’-র আয়োজন করেছে চর্মশিল্পের সংগঠন ইন্ডিয়ান লেদার প্রোডাক্টস অ্যাসোসিয়েশন (ইলপা)।
ইলপা-র সহ-সভাপতি রাজর্ষি দে-র দাবি, ‘‘কোভিডের পরে রফতানি চালু হতেই দেখলাম চাহিদা তলানিতে। ফলে জিনিসের দাম কমাতে হয়। মূল্যবৃদ্ধি এবং অর্থনীতির সঙ্কট বিক্রিবাটাকে ছন্দে ফিরতে দেয়নি। ইউরোপ, আমেরিকায় চাহিদা এখনও কম, ভারতীয় চর্মজাত পণ্যের অন্যতম বাজার যে দু’টি। তাই দাম বাড়াতে পারেনি কেউ। অথচ বাজার এবং সুনাম ধরে রাখতে মানের সঙ্গে আপস না করায় খরচও কমেনি।’’
হালে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো করেছে লোহিত সাগরে হুথি জঙ্গিদের হানা। রাজর্ষি জানান, সুয়েজ খাল দিয়ে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারছে না। উত্তমাশা অন্তরীপ হয়ে ঘুরপথে যেতে হচ্ছে। ফলে পরিবহণের সময় ও খরচ বেড়েছে। কন্টেনার পাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। বাজার ধরে রাখতে অনেক ক্ষেত্রে বিমানে পণ্য পাঠাতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে রফতানি খরচ বেড়েছে প্রায় ২০%। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কেন্দ্রও। দেশের আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে অর্থ মন্ত্রকের প্রকাশিত ফেব্রুয়ারির রিপোর্টে শুক্রবার বলা হয়েছে, সুয়েজে জাহাজ চলাচল ব্যাহত হওয়ার বিরূপ প্রভাব পড়েছে বিশ্ব জুড়ে, প্রধানত খাদ্যপণ্যের উপর। বেড়ে গিয়েছে দাম। হিসাব বলছে, গত মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সেখান দিয়ে কন্টেনারে করে পণ্য চলাচল কমেছে ৮২%। কন্টেনার ছাড়া নিয়ে যাওয়া পণ্য (খাদ্যপণ্য, কয়লা ইত্যাদি) চলাচল কমেছে ৬০%। ঘুরপথে যাওয়ার মাথাব্যথা শুধু বাড়তি খরচ ও সময় নয়। উত্তমাশা অন্তরীপে জলদস্যুর কবলে পড়ছে জাহাজ। ফলে বেড়েছে বিমার দাবি।
ইলপার চেয়ারম্যান অর্জুন মুকুন্দ কুলকার্নি জানান, মোট চর্মজাত পণ্য রফতানির ৫৫% হয় পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্বাঞ্চল থেকে। গত অর্থবর্ষে এখান থেকে চামড়া ও চর্মজাত রফতানির অঙ্ক ছিল ৫০৯৮ কোটি টাকা। আগের বারের থেকে ১০% বেশি।