করোনার আগে পর্যন্ত দারিদ্র দূরীকরণের কাজ উল্লেখযোগ্য ভাবে এগোচ্ছিল। ফাইল চিত্র।
আর্থিক ভাবে প্রান্তিকতম মানুষদের চরম দারিদ্রের বৃত্ত থেকে বার করে আনার প্রক্রিয়া যে অতিমারির উপর্যুপরি আক্রমণে ক্রমাগত বাধা পাচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়েছে বিভিন্ন রিপোর্টে। বুধবার এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এডিবি) জানাল, এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চলতি বছরের শেষে এই কর্মসূচি যে জায়গায় পৌঁছবে, করোনা হানা না দিলে তা অর্জন করা যেত ২০২০ সালেই। অর্থাৎ, অতিমারির চার ঢেউয়ে সেই প্রক্রিয়া দু’বছর পিছিয়ে গিয়েছে।
দিনে যে সমস্ত মানুষের রোজগার বা খরচের ক্ষমতা ১.৯০ ডলারের (প্রায় ১৫২ টাকা) নীচে, তাঁদেরই অতি দরিদ্র ধরে নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, করোনার আগে পর্যন্ত ওই অঞ্চলে দারিদ্র দূরীকরণের কাজ উল্লেখযোগ্য ভাবে এগোচ্ছিল। আর এখন রোজগার কমার পাশাপাশি, খাদ্যসুরক্ষা, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবাও অনেকটাই চলে গিয়েছে দরিদ্র মানুষদের নাগালের বাইরে। এগুলিও দারিদ্র কমানোর কাজকে বাধা দেবে। এডিবির মুখ্য অর্থনীতিবিদ অ্যালবার্ট পার্ক বলেন, ‘‘অতিমারিতে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খেয়েছেন দরিদ্র ও দুর্বল মানুষেরা। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বটে, কিন্তু দারিদ্র ঘোচানোর কাজটা এখন আগের থেকে অনেক কঠিন হয়ে গিয়েছে।’’ তাদের রিপোর্ট বলছে, নতুন করে বিঘ্ন না ঘটলে ২০৩০ সাল নাগাদ এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অতি দরিদ্রের অনুপাতকে ১ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনা যাবে। ২৫% মানুষকে দেওয়া যাবে মধ্যবিত্তের মর্যাদা (দিনে রোজগার ১১৯৭ টাকা)।
এ দিকে, ভারতীয় অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া বজায় থাকলেও তাকেও ভূ-রাজনৈতিক সমস্যার জেরে সরবরাহ সমস্যা এবং চড়া মূল্যবৃদ্ধির মুখোমুখি হতে হয়েছে। এ দিনই এক সাক্ষাৎকারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির সদস্য জয়ন্ত আর বর্মা জানিয়েছেন, সেই ভূ-রাজনৈতিক সমস্যা এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রক্রিয়া ঝুঁকির মুখে পড়বে। তবে মূল্যবৃদ্ধি ক্রমশ কমবে বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি।