—প্রতীকী চিত্র।
আদানি গোষ্ঠী, পতঞ্জলি এবং টাটা গোষ্ঠীর বিগ বাস্কেটের মতো সংস্থার কথায় মোদী সরকার তিন কৃষি আইন নিয়ে এসেছিল বলে তথ্য প্রকাশ্যে আসায় আজ তা নিয়ে তদন্তের দাবি জানাল কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, মোদী সরকারের ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি তথা কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে ফায়দা পাইয়ে দিতেই তিন কৃষি আইন তৈরি হয়েছিল বলে কৃষক সংগঠনগুলির আশঙ্কা এখন প্রমাণিত। কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য দীপেন্দ্র সিংহ হুডা আজ দাবি তুলেছেন, কৃষক আন্দোলনের ফলে তিন আইন প্রত্যাহার করতে হয়েছে মোদী সরকারকে। কিন্তু কেন শিল্পপতিদের কথায় কোভিডের লকডাউনের মধ্যে তা নিয়ে আসা হয়েছিল, কেন্দ্র তার ব্যাখ্যা দিক।
তিন কৃষি আইনের উৎস নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টকে ‘হাতিয়ার’ করে কংগ্রেস আগেই অভিযোগ তুলেছিল, আদানি গোষ্ঠীর মতো কর্পোরেট সংস্থার কথাতেই তিন কৃষি আইন তৈরি করেছিল কেন্দ্র। আজ হরিয়ানার নেতা হুডা কংগ্রেস দফতরে সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তার আড়ালে গোটা কৃষি ব্যবস্থা, চাষির জমি কর্পোরেট সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছিল।’’ যদিও আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক অনুষ্ঠানে নীতি আয়োগের রিপোর্টের উল্লেখ করে দাবি করেন, গত পাঁচ বছরে দেশে ১৩.৫ কোটি মানুষকে দারিদ্রসীমার বাইরে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। সামগ্রিক রোজগার বৃদ্ধির দাবি করতে গিয়ে উল্লেখ করেছেন স্টেট ব্যাঙ্কের রিপোর্টের কথা।
কৃষকদের উন্নতির জন্য মোদী সরকার অশোক দালওয়াইয়ের নেতৃত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রক কমিটি গঠন করে। সেই কমিটি তিন হাজার পাতার রিপোর্ট দিয়েছিল। একই সময়ে আমেরিকার সফটওয়্যার ব্যবসায়ী শরদ মারাথের পরামর্শে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার রাস্তা খুঁজতে সেই দালওয়াইয়েরই নেতৃত্বে টাস্ক ফোর্স গঠন করে নীতি আয়োগ। সেখানে অত্যাবশ্যক পণ্য আইনে কৃষিপণ্য মজুতের যে ঊর্ধ্বসীমা ছিল, তা শিথিল করার সওয়াল করে কর্পোরেট সংস্থাগুলি। আন্তঃমন্ত্রক কমিটি বলেছিল, ফসল ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে (এমএসপি) কেনা হলে মজুতদারিতে ছাড় দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু টাস্ক ফোর্স বলে, ফসল এমএসপি-তে কেনা না হলেও কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে যত খুশি মজুতদারি করতে দেওয়া হোক। মোদী সরকার টাস্ক ফোর্সের সুপারিশ মেনে তিন কৃষি আইনের মধ্যে অত্যাবশক পণ্য আইনে মজুতদারিতে ছাড় দিয়ে দেয়।
হুডার অভিযোগ, হরিয়ানা, পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ-সহ সারা দেশের কৃষকদের আন্দোলনে মোদী সরকার কৃষি আইন প্রত্যাহার করে। কিন্তু এমএসপি-র আইনি নিশ্চয়তা, আন্দোলনের সময়ে মৃত কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের মতো কোনও প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি।