—প্রতীকী ছবি
গত (২০১৯-২০) অর্থবর্ষের (অ্যাসেসমেন্ট বছর ২০২০-২১) আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা যাতে ৩১ ডিসেম্বরের পরে আরও তিন মাস বাড়ানো হয়, আয়কর দফতরকে নাগাড়ে সেই আর্জি জানাচ্ছিলেন করদাতারা। একাংশ করোনার জেরে সমস্যায় পড়ার যুক্তি দেখিয়ে টুইটারের মাধ্যমেও আবেদনের পথ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতে সাড়া না-পেয়ে অনেকেই পড়িমড়ি করে রিটার্ন দাখিল করেছেন এর মধ্যে। এই অবস্থায় একেবারে শেষ মুহূর্তে সাড়া দিল সরকার। বুধবার আয়কর দফতর জানাল, অতিমারির আবহে করদাতাদের অনুরোধেই জমার সময় আরও ১০ দিন বাড়ানো হল। ফলে এই নিয়ে তিনবার পিছোল তার সময়সীমা। ব্যক্তিগত করদাতাদের রিটার্ন জমার নতুন সময়সীমা ১০ জানুয়ারি। যাঁদের করের অঙ্ক ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত, তাঁদের বর্ধিত সময়ের জন্য সুদ দিতে হবে না। কিন্তু কর তার বেশি হলে বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী তার উপরে এক মাসের সুদ চাপবে।
যাঁদের অ্যাকাউন্ট অডিট করাতে হয় বা দেশে-বিদেশে বিভিন্ন লেনদেনের তথ্য জানাতে হয়, তাঁদের রিটার্ন দাখিল করার শেষ দিন ১৫ ফেব্রুয়ারি। যাঁরা নিজেরাই হিসেব করে (সেল্ফ অ্যাসেসমেন্ট) কর জমা দেন, তাঁদেরও তা দিতে হবে ১০ জানুয়ারি বা ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে (করের অঙ্ক ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে)। ১৫ ফেব্রুয়ারির সময়সীমা প্রযোজ্য হবে সংস্থাগুলির জন্যও। কর সংক্রান্ত বিভিন্ন অডিট রিপোর্ট জমা দিতে হবে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, করোনার আবহে বিপাকে পড়ার যুক্তি তুলে ধরে এই দফায় ফের রিটার্ন জমার সময় বাড়ানোর আবেদন জমা পড়ছিল প্রতি দিন। কিন্তু কেন্দ্র নীরবই ছিল। উল্টে বর্ষবরণের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে প্রতি দিন নিয়ম করে প্রায় ঘণ্টায় ঘণ্টায় কত কর রিটার্ন জমা পড়ল, তার হিসেব দিচ্ছিল আয়কর দফতর। সরকারি মহলেরই একাংশের ইঙ্গিত, এটা আসলে করদাতাদের উপরে চাপ তৈরির জন্য কেন্দ্রের একপ্রকার কৌশল। যাতে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যতটা সম্ভব বেশি রিটার্ন জমা পড়ে যায়। যে কারণে বুধবার সন্ধ্যেয় সময়সীমা বাড়ানোর কথা বলেছে। তা-ও মাত্র ১০ দিনের জন্য। পিছোনোর আর্জি জানানো অনেক করদাতাই ততক্ষণে জমার কাজ সেরে ফেলেছেন।
কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অবশ্য দাবি, ভারত সরকার কর সংক্রান্ত বিধি মানার জন্য নাগরিকদের বেশি সময় দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি সহানুভূতিশীল এবং উদারমনা। আয়কর দফতরের হিসেব, ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমা পড়েছে ৪.৫৪ কোটিরও বেশি।
এ দিন দফতর জানিয়েছে, প্রত্যক্ষ কর এবং বেনামি আইনে নোটিস পাঠানো বা মামলায় রায় দেওয়া যাবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। গত অর্থবর্ষের জিএসটি রিটার্ন জমার নতুন সময়সীমা বাঁধা হয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারি।