এখনই গ্রাহকদের কল ড্রপের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে না টেলিকম সংস্থাগুলি

নতুন বছর থেকেই মোবাইলে কথা বলার মাঝপথে ফোন কেটে গেলে (কল-ড্রপ) গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছিল টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)। কিন্তু এখনই গ্রাহকদের সেই সুবিধা দিচ্ছে না টেলিকম সংস্থাগুলি। তাদের দাবি, প্রথমত, বিষয়টি এখনও আদালতের বিচারাধীন। দ্বিতীয়, ‘কল-ড্রপ’ নির্ধারণের পদ্ধতি এখনও স্পষ্ট নয়।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৬ ১৭:৩৮
Share:

নতুন বছর থেকেই মোবাইলে কথা বলার মাঝপথে ফোন কেটে গেলে (কল-ড্রপ) গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছিল টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অব ইন্ডিয়া (ট্রাই)। কিন্তু এখনই গ্রাহকদের সেই সুবিধা দিচ্ছে না টেলিকম সংস্থাগুলি। তাদের দাবি, প্রথমত, বিষয়টি এখনও আদালতের বিচারাধীন। দ্বিতীয়, ‘কল-ড্রপ’ নির্ধারণের পদ্ধতি এখনও স্পষ্ট নয়। সেই সব ধোঁয়াশা না-কাটা পর্যন্ত গ্রাহকদের এই সুবিধা দিতে আপারগ তারা।

Advertisement

যদিও ট্রাই-এর দাবি, নতুন ওই আইন শুক্রবার, বছরের প্রথম দিন থেকেই কার্যকর হচ্ছে। সেই নিয়মের উপরে আদালতের কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। পাশাপাশি ‘কল-ড্রপ’ নির্ধারণের পদ্ধতি তৈরি না হওয়ার অভিযোগও মানতে নারাজ ট্রাই।

গত বছরের গোড়া থেকেই দেশ জুড়ে গ্রাহকদের বড় অংশই ‘কল-ড্রপ’-এর সমস্যায় জেরবার হয়েছেন। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার-ট্রাই এবং টেলিকম শিল্পমহল একে অপরের বিরুদ্ধে দায় চাপিয়েছে। শেষে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরে ট্রাই আইন সংশোধন করে জানায়, নতুন বছর থেকে প্রতিটি ‘কল-ড্রপ’-এর জন্য এক টাকা হিসেবে একজন গ্রাহক দিনে সর্বোচ্চ তিন টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবেন।

Advertisement

কিন্তু ইতিমধ্যেই দিল্লি হাইকোর্টে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছে টেলিকম শিল্পমহল। পরবর্তী শুনানি আগামী ৬ জানুয়ারি। তার আগে এখনই গ্রাহকদের এই সুবিধা দেওয়ার কথা ভাবছে না টেলিকম শিল্পমহল। এই শিল্পের অন্যতম সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিফায়েড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডর্স অব ইন্ডিয়া-র সেক্রেটারি জেনারেল অশোক সুদের বক্তব্য, বিষয়টি বিচারাধীন। তা ছাড়া পরবর্তী শুনানি না-হওয়া পর্যন্ত কোনও সংস্থার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না-নেওয়ার আশ্বাস আদালতকে দিয়েছে ট্রাই।

টেলিকম শিল্পের আরও দাবি, ‘কল-ড্রপ’ মাপার পদ্ধতি নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। বেশি কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার সমাধান এখনও বাকি। তা ছাড়া ‘কল-ড্রপ’ হয়েছে বলে কোনও গ্রাহক মনে করলেও তিনি কোথায় যোগাযোগ করবেন, তা স্পষ্ট নয়। কারণ সংস্থাগুলির গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রগুলিও এ ব্যাপারে অবগত নয়।

অনেকেই বলছেন, পরিষেবার মানের যে হিসাব ট্রাই-কে নিয়মিত সংস্থাগুলিকে দিতে হয় সেখান থেকেই তো ‘কল-ড্রপ’-এর হিসাব পাওয়া সম্ভব। এই যুক্তিও মানতে নারাজ টেলিকম শিল্প। তাদের দাবি, সে ক্ষেত্রে সার্বিক ভাবে পরিষেবার মান যাচাই করা হয়। ব্যক্তিগত ভাবে গ্রাহকদের পরিষেবার মান নয়। ফলে ট্রাই-এ নয়া নির্দেশ মানতে হলে আলাদা ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে।

৬ জানুয়ারির আগে টেলিকম সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কোনও রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না-নেওয়া আশ্বাস দিলেও অবশ্য টেলিকম শিল্পের অন্য দাবিগুলি মানতে নারাজ ট্রাই। আদালতের নির্দেশ নিয়ে সরসারি মন্তব্য করতে চাননি ট্রাই-এর কর্তারা। তবে তাঁদের দাবি, ওই নিয়ম চালু করার বিরুদ্ধে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি আদালত। ফলে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই তা কার্যকর হচ্ছে।

‘কল ড্রপ’-এর হিসেব কষার পদ্ধতিও নির্ধারণ করে তবেই নয়া নিয়ম চালুর কথা বলা হয়েছে, দাবি ট্রাই-এর। উল্লেখ্য, ডিসেম্বরের গোড়ায় কলকাতায় ‘ইনফোকম’-এর অনুষ্ঠানের ফাঁকে একই দাবি করেছিলেন ট্রাই-এর চেয়ারম্যান আর এস শর্মা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement