প্রায় যুদ্ধ। তা মেটাতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ট্রাই। বিভিন্ন সংস্থার একে অপরের সংযোগ ব্যবহার নিয়ে বিতর্কে শুক্রবার আলোচনার টেবিলে মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স জিও-র পাশাপাশি তাদের ‘বিরোধী’ তিন টেলি পরিষেবা সংস্থা। যদিও বাদ টেলিকম শিল্পের সংগঠন সিওএআই-এর কর্তারাই। এ নিয়ে চাপান উতোর। শেষ পর্যন্ত জিও-র সঙ্গে আলাদা আলাদা করে বৈঠকে বসতে রাজি বিরোধী সংস্থাগুলি।
সাম্প্রতিক কালে দেশের টেলিকম শিল্পের ইতিহাসে তুঙ্গে ওঠা বিতর্কে এটাই চুম্বকে আজকের নির্যাস। এ নিয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ জিও, ভোডাফোন, এয়ারটেল ও আইডিয়া-র কর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন ট্রাই-কর্তারা। বস্তুত, একটি সংস্থার কাছ থেকে অন্য সংস্থার নেটওয়ার্কে (অর্থাৎ, নম্বরে) ফোন এলে প্রথম সংস্থাটিকে ‘ইন্টারকানেকশন ইউসেজ চার্জ’ দিতে হয়। টেলিকম শিল্পের অভিযোগ, জিও এই সংযোগ ব্যবহারের খরচ দিতে চাইছে না। এয়ারটেল এ দিনও ট্রাই-এর কাছে অভিযোগে বলেছে, বিনামূল্যে অন্য ধরনের পরিষেবার (ইঙ্গিত জিও-র এলটিই প্রযুক্তি নির্ভর ফোনের দিকে) ফোন যেন বাকি সব সংস্থার পরিকাঠামোয় সুনামির মতো আছড়ে পড়ে সংযোগ ব্যবস্থা নষ্ট না-করে। উল্লেখ্য, ফোন করার জন্য জিও গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনও মাসুল নেবে না বলে জানিয়েছে।
জিও-র পাল্টা অভিযোগ, নিয়ম মতো অন্য সংস্থাগুলি জিও-র পরিষেবা পৌঁছতে প্রয়োজনীয় ‘ইন্টারকানেকশন’ ব্যবস্থার সুযোগ দিচ্ছে না। জিও-র পরিচালন পর্ষদের সদস্য মহেন্দ্র নাহাটা বলেন, ‘‘এটা বিচার পাওয়ার, গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষা করার যুদ্ধ। ভোডাফোন বা এয়ারটেলের সঙ্গে লড়াই নয়। ইন্টারকানেকশন সমস্যার কথা ট্রাই-কে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি দেখবে।’’
তবে টেলিকম শিল্পের সংগঠন ‘সেলুলার অপারের্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’ (সিওএআই) এ দিনের বৈঠকে ব্রাত্য ছিল। সিওএআই-এর অভিযোগ, জিও-র ইন্ধনেই তা হয়েছে। যদিও ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন নাহাটা। তবে এই সব বিতর্কের মধ্যেই অবশ্য সিওএআই-এর ডিরেক্টর জেনারেল রাজন এস ম্যাথুজ জানান, পুরনো সংস্থাগুলি আন্তঃ-সংযোগ সমস্যা নিয়ে জিও-র সঙ্গে আলাদা করে বসতে রাজি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ট্রাই-এর সচিব সুধীর গুপ্ত পরিষেবার মান বজায় রেখে সমাধানসূত্র খোঁজার জন্য সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেন। পরে ম্যাথুজ বলেন, ‘‘বৈঠকে উপস্থিত সংস্থাগুলির কাছ থেকে যা বুঝেছি, তা হল, ট্রাই বলেছে এটা দ্বিপাক্ষিক আলোচনার বিষয়। তাই তারা নিজেদের মধ্যে এ নিয়ে বসুক। এবং তার ভিত্তিতে চুক্তি করুক।’’
মুখোমুখি আলাদা বৈঠক হলে যুদ্ধের উত্তাপ আদৌ কমবে কি না, তা অবশ্য সময়ই বলবে।