পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়
ক্যানসার, স্নায়ুরোগ-সহ নানা জটিল রোগের নিখুঁত চিকিৎসার জন্য প্রযুক্তির সাহায্যে রোগীদের বিপুল তথ্যভান্ডার বিশ্লেষণ। কিংবা হাইড্রোজেনের বাণিজ্যিক উৎপাদন ও জ্বালানি হিসেবে তার নিরাপদ ব্যবহারের প্রযুক্তি তৈরি। অথবা স্থানীয় ভাষায় কথা বলেই সরাসরি কম্পিউটার বা মোবাইলের পর্দায় আবেদনপত্র পূরণের জন্য বিশেষ গাণিতিক পরিভাষা রূপায়ণ— সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে ভবিষ্যতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এমন সব আধুনিক গবেষণার সূতিকাগৃহ হতে পারে কলকাতা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সেই যজ্ঞে শামিল হয়েছে অনাবাসী ভারতীয় শিল্পপতি তথা রাজ্যের অন্যতম বিনিয়োগকারী পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের দ্য চ্যাটার্জি গোষ্ঠী-ও (টিসিজি)।
শুধু লগ্নি করেই ক্ষান্ত থাকা নয়, শিক্ষা ও শিল্পের মেলবন্ধন এবং সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গী হতে অনেক শিল্প সংস্থাই (ভারতে টাটা গোষ্ঠী-সহ) আলাদা ভাবে গবেষণা ক্ষেত্রে পা রাখে। সেই লক্ষ্যে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে টিসিজি সেন্টারস ফর রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন ইন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (টিজিসি ক্রেস্ট) গড়েছে চ্যাটার্জি গোষ্ঠী। সেখানে তৈরি হয়েছে অত্যাধুনিক চারটি পরীক্ষাগার।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বিজ্ঞানের তত্ত্ব সব সময়ে বাণিজ্যিক কাজে লাগানো যায় না। জরুরি হয় উপযুক্ত প্রযুক্তি। সেই সংক্রান্ত গবেষণা ও সামাজিক উন্নয়নের অংশীদার হওয়ার স্বপ্ন থেকেই কলকাতায় অলাভজনক একটি আধুনিক গবেষণা কেন্দ্র গড়ার কথা ভেবেছিলেন পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, জানান টিসিজি ক্রেস্টের চিফ ডেভেলপমেন্ট অফিসার জয়দীপ ভট্টাচার্য। অগ্রণী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে পড়ুয়াদেরও সেখানে গবেষণার সুযোগ দিচ্ছেন তাঁরা। তিনি জানান, আবহাওয়া সংক্রান্ত আরও নিখুঁত তথ্যের হিসাব কষার জন্য প্রয়োজন হতে পারে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের। কারণ, যা কষতে সুপার কম্পিউটারের বহু বছর সময় লাগে, কোয়ান্টাম কম্পিউটারে তা হতে পারে মাত্র কয়েক ঘণ্টায়। ক্রিপ্টোলজি বা সঙ্কেতবিদ্যার গবেষণার অন্যতম হল ডিজিটাল লেনদেন কিংবা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আরও সুরক্ষিত উপায়ে তথ্য আদানপ্রদানের পরিকাঠামো গড়া। ভবিষ্যতে সেই সব প্রযুক্তি গবেষণার অন্যতম গন্তব্য হতে চায় টিসিজি ক্রেস্ট। ফায়ার ও ইন্ডোক্রিপ্ট নামে দু’টি প্রযুক্তি সম্মেলন আয়োজনের যুগ্ম দায়িত্বে রয়েছে তারা।