নোট নাকচের জমানায় অবশেষে কিছুটা রেহাই প্রবীণ নাগরিকদের। তবে বয়স ৭০ ছাড়ালে তবেই মিলবে সেই সুবিধা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৮ নভেম্বর ৫০০ ও ১,০০০-এর নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭০ বছরের বেশি বয়স্ক যে-সব নাগরিক ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাতিল টাকায় ব্যাঙ্কে জমা দিয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে আর কোনও তথ্য যাচাই করবে না আয়কর দফতর। অন্যদের জন্য এই সীমা ২.৫ লক্ষ টাকা। অর্থ মন্ত্রকের এক অফিসার জানিয়েছেন, ‘‘এ নিয়ে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। প্রত্যেকের জমাই যে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করব, তা নয়। আয়কর দফতর কাদের তথ্য যাচাই করবে, তা তারা ঠিক করে নিয়েছে। স্পষ্ট করে বলতে চাই, এ ক্ষেত্রে ‘যাচাই’ করার কথা বলা হয়েছে, অনুসন্ধান বা বৈধতা বিচার নয়।’’
বয়স ৭০ ছাড়ালে অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নজরদারির আওতায় আসবেন না, যদি তাঁর জমা দেওয়া নগদের উৎস হয় বাড়িতে জমানো টাকা বা অতীতের আয় থেকে সঞ্চয়। পাশাপাশি, ওই বয়স্ক ব্যক্তির ব্যবসা খাতে কোনও আয় না-থাকলে তবেই তিনি নজরদারি এড়াতে পারবেন।
যাচাই কী ভাবে করা হবে, তা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসার জানান, ৭০ বছরের মধ্যে বয়স হলে ২.৫ লক্ষ টাকার বেশি যাঁরা বাতিল নোটে জমা করেছেন, তাঁদের তথ্য খতিয়ে দেখা হবে অনলাইনে। আয়কর দফতরের ওয়েবসাইটে গিয়ে তাঁকে ব্যাখ্যা করতে হবে, ওই জমার উৎস কী। আগে দাখিল করা আয়কর রিটার্নের সঙ্গে যদি জমার অঙ্ক মিলে যায়, তা হলে ওই পর্বেই বন্ধ হয়ে যাবে তথ্য যাচাই। কিন্তু কেউ যদি তথ্য না-দেন, কিংবা আয়ের ঘোষিত উৎসের সঙ্গে জমার অঙ্কের মিল না-থাকায় সন্দেহ তৈরি হয়, সে ক্ষেত্রে আরও স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। তবে সে জন্য কোনও কৈফিয়ত তলব করা হবে না, পাঠানো হবে না কারণ দর্শানোর নোটিসও। অনলাইনে যাচাই করা ছাড়া কোনও তৃতীয় পক্ষ মারফত তদন্ত বা বৈধতা বিচার করা হবে না বলেই অর্থ মন্ত্রক সূত্রের দাবি। অনলাইনে তথ্য চেয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে ই-মেল ও এসএমএস পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ওই অফিসার। যাঁরা ই-ফাইল সংক্রান্ত পোর্টালে এখনও নিজেদের নাম নথিভুক্ত করাননি, তাঁদের তা দ্রুত সেরে নিতে বলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: খোলা চিঠি বাবা-মাকে, সমাজের আয়না হয়েই বিজ্ঞাপনে বাজিমাত মিরিন্ডার
এ দিকে, নগদে ২০ হাজার টাকা বা তার বেশি ঋণ ফেরত খাতে জমা দিলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আয়কর দফতর নজরদারি শুরু করতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। নোট-কাণ্ডের পরে ‘অপারেশন ক্লিন মানি’ প্রকল্পের আওতায় কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদ আয়কর অফিসারদের পাঠানো নির্দেশে এ কথা জানিয়েছে। তবে ভাল করে খোঁজ-খবর নিয়ে তবেই এ ধরনের তদন্ত শুরু করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের ইঙ্গিত।