সময়টা ভালো যাচ্ছে না টাটা মোটরসের। গত অর্থবর্ষের পরে এ বারের প্রথম ত্রৈমাসিকে লোকসানের মুখে পড়েছে তারা। সংস্থার মূল খুঁটি বাণিজ্যিক গাড়ির বাজারে দখলদারিও পাঁচ বছরের তুলনায় অনেকটাই কমেছে। ঘুরে দাঁড়াতে টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরনের তত্ত্বাবধানে একটা ঝাঁকুনি দিতে চাইছে সংস্থাটি। নতুন ৪,০০০ কোটি টাকার লগ্নির পাশাপাশি বাজারের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসা পরিচালনার খোলনলচে বদলাতে চাইছে তারা।
সেই পরিকল্পনার ইঙ্গিত মিলেছে সংস্থার এমডি গুয়েন্টার বুশেকের কথায়। তিনি জানান, ২০১৭-’১৮-তে মোট ৪,০০০ কোটি টাকা লগ্নি করবে সংস্থাটি। বাজারে অংশীদারি ৫ শতাংশ বাড়ানোর লক্ষ্যে ১,৫০০ কোটি টাকা লগ্নি হবে বাণিজ্যিক গাড়ির ব্যবসায়। বাকিটা হবে যাত্রীবাহী গাড়ির ব্যবসায়। ১০টি নতুন বাণিজ্যিক গাড়িও আসার কথা।
বাণিজ্যিক গাড়ির মতো পরিচিতি যাত্রীবাহী গাড়ির ক্ষেত্রে পায়নি টাটা মোটরস। পরে বিদেশি অন্য বহুজাতিকগুলির দাপটে সেই জায়গা আরও কিছুটা হারায় তারা। প্রতিযোগীরা যখন নতুন নতুন গাড়ি এনে ক্রেতাদের মনে ঠাঁই করে নিচ্ছে, তখন সেই দৌড়ে পা মেলাতে পারেনি সংস্থা। উপরন্তু, গাড়ি কেনার পরে তার রক্ষণাবেক্ষণ পরিষেবায় ঢিলেমিও ক্রেতাদের একাংশের ভরসায় প্রভাব ফেলতে শুরু করে। ফলে পাঁচ বছর আগেও বাণিজ্যিক গাড়ির বাজারে টাটা মোটরসের অংশীদারি ৬০% থাকলেও, গত মার্চে তা নেমে আসে ৪৪.৪ শতাংশে। আর যাত্রীবাহী গাড়ির বাজারে তৃতীয় স্থান হারাতে হয় তাদের।
ঘুরে দাঁড়াতে প্রাক্তন এমডি কার্ল স্লিমের তত্ত্বাবধানে এর আগে নতুন কর্মসূচিতে কিছুটা ফল মিললেও দুর্ঘটনায় বিদেশে কার্লের মৃত্যুতে তা ধাক্কা খায়। তারপরও অবশ্য কিছু পরিকল্পনা নিলেও এখনও যে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি তা স্পষ্ট সংস্থার সাম্প্রতিক বার্ষিক সভায় টাটা গোষ্ঠীর শীর্ষ কর্তা এন চন্দ্রশেখরনের কথায়ও। যদিও একই সঙ্গে তাঁর দাবি, জিএসটি নিয়ে অনিশ্চয়তা, ‘বিএস৩’ থেকে ‘বিএস৪’ মাপকাঠিতে উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রে পুরানো বিএস৩ গাড়ির বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদির কথাও বলেছেন তিনি। ভবিষ্যতে ব্যবসার পরিবেশগত অনিশ্চয়তার আশঙ্কা প্রকাশ করলেও, তিনি বলেছেন, ‘‘দেশের বাজারে সংস্থার ব্যবসা ঘুরে দাঁড় করানোই আমাদের মূল লক্ষ্য।’’