উৎসবের মরসুমের মুখে সানন্দে গাড়ি উৎপাদন বাড়াচ্ছে টাটা মোটরস। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এ মাস থেকেই সহযোগী যন্ত্রাংশ শিল্পকে প্রায় ৫০% বেশি বরাত দিতে শুরু করেছে তারা।
সহযোগী যন্ত্রাংশ সংস্থাগুলির সঙ্গে তাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক সংস্থার অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে জানিয়ে এ নিয়ে অবশ্য বিশদে মুখ খুলতে চায়নি টাটারা। তবে সংস্থার এক মুখপাত্র বলেন, ‘‘টিয়াগোর ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা মেটাতেই সানন্দের কারখানায় উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াচ্ছি।’’
সংস্থার সহযোগী শিল্প সূত্র অবশ্য জানাচ্ছে, দু’এক মাস আগেও তারা দিনে ৬০-৭০টি ন্যানো তৈরির যন্ত্রাংশ সরবরাহ করত সানন্দে। সেপ্টেম্বর থেকে ১০০টির যন্ত্রাংশ দিতে বলেছে টাটারা। তেমনই আগে দৈনিক ২০০টি টিয়াগো তৈরির জন্য যন্ত্রাংশ জোগানোর নির্দেশ ছিল। এখন বলা হয়েছে ৩০০টি দিতে।
আট বছর আগে সিঙ্গুর থেকে গুজরাতের সানন্দে ন্যানো কারখানা সরিয়েছিল টাটা মোটরস। শুরুতে গাড়ি তৈরির ক্ষমতা ছিল বছরে ২.৫০ লক্ষ। কথা ছিল পরে ধাপে ধাপে ৩.৫ লক্ষ ও ৫ লক্ষে পৌঁছনোর। কিন্তু গোড়ার দিকে ন্যানোর বিক্রি বাড়লেও কারখানাটির প্রারম্ভিক উৎপাদন ক্ষমতার তুলনায় তা ছিল বেশ কম। যেমন, ২০০৯-’১০ সালে সেখানে বছরে ৩০ হাজারের মতো ন্যানো তৈরি হয়। পরের দু’বছরে বেড়ে হয় যথাক্রমে ৭০ হাজার ও ৭৪ হাজারেরও বেশি। কিন্তু তারপর বিক্রি কমতে শুরু করে। ২০১৪-’১৫ সালে নেমে আসে ১৭ হাজারের কাছে। চলতি অর্থবর্ষের এপ্রিলে বিক্রি ১,১০০ ছাড়ায়। কিন্তু ফের তা মাসে ৭০০টিতে নেমেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের অভিযোগ, সিঙ্গুর কাণ্ড ও বিপণন কৌশলে ত্রুটির জেরেই এতটা ধাক্কা খায় ন্যানো।
যাত্রী গাড়ির বাজারে হারানো জায়গা ফিরে পেতে ২০২০ পর্যন্ত বছরে দু’টি করে নতুন গাড়ি আনার লক্ষ্য নিয়েছে টাটারা। কিন্তু পুণে বা পন্থনগর কারখানায় কার্যত নতুন গাড়ি তৈরির পরিকাঠামো গড়ার সুযোগ নেই। যা রয়েছে সানন্দে। ফলে সেখানেই নতুন ধরনের (প্ল্যাটফর্ম) গাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থা। ন্যানোর পরে সেখানে তৈরি হচ্ছে তাদের আর একটি ছোট গাড়ি টিয়াগো। এপ্রিলে ৩,০২২টি টিয়াগো বিক্রি হলেও জুলাইয়ে তা ৫,০০০ ছাড়িয়েছে।
সহযোগী যন্ত্রাংশ সংস্থাগুলির আশা আগামী কয়েক মাসে তাদের বরাত আরও বাড়বে । কারণ, উৎসবের মরসুমে এমনিতেই গাড়ির চাহিদা অন্তত ১০-১৫% বাড়ে। এ বার ভাল বর্ষা, সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ রূপায়ণ ইত্যাদির জেরে তা আরও বাড়তে পারে বলে আশা গাড়ি শিল্পের।