টাটা ইভিশন।— ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
বছর ২০ আগে যখন টাটা প্রথম ‘ইন্ডিকা’ নামের গাড়ি নিয়ে বাজারে আসে, ছোট গাড়ি হিসাবে সেই মডেল দারুণ সফল হয়। তার কুড়ি বছর পর আবার টাটা এমন এক ধারণা নিয়ে বাজারে হাজির, দেখেই অনুমান, এটাও খুব জনপ্রিয় হবে। সবথেকে বড় কথা, টাটার তরফে এটা প্রথম ‘সম্পূর্ণ বিদ্যুৎচালিত’ গাড়ি হতে চলেছে ।
ভারতে এক দিকে তেলের দাম নিয়ে যেমন সাধারণ মানুষের চিন্তার শেষ নেই, আরেক দিকে দূষণ। বড় শহরগুলির রাস্তায় দাঁড়িয়ে শ্বাস নেওয়া সিগারেট খাওয়ার চেয়েও অনেক গুণ বেশি খারাপ— নানা সমীক্ষার রিপোর্টে এরকমই ভয়ানক বায়ুদূষণের থাবা টের পাওয়া গিয়েছে। দিল্লিতে জোড়-বিজোড় গাড়ির নিয়ম করা হল। ১৫ বছরের পুরনো গাড়ি বাতিল করা হল, কিন্তু দিনে দিনে দূষণের মাত্রা বেড়েই চলছে, রাস্তায় গাড়ির পরিমাণও।
বিদেশে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি নতুন কিছু নয়, টেসলার গাড়ি সে দিক থেকে বিখ্যাত বলা যায়। হাইব্রিড গাড়ি হিসাবে টয়োটা পাইরাস যথেষ্ট প্রচলিত । কিন্তু ভারতে এখনও মূলত তেলের উপরেই যানবহন নির্ভর করে। সেখানে বাজারে নতুন চমক হাজির করেছে টাটা । একেবারে অন্য রকমের লুক নিয়ে হাজির করেছে ইভিশন গাড়িটি । টাটার ওমেগা আর্ক প্ল্যাটফর্মের উপর তৈরি এই গাড়ির ব্যাপারে খুঁটিনাটি সব তথ্য এখনও না পাওয়া গেলেও, কোম্পানির তরফে যতটা জানা গিয়েছে, সেটাও যথেষ্ট আকর্ষনীয়।
আরও পড়ুন: হন্ডা কিনলে বিদেশ ভ্রমণ ফ্রি!
যে কোনও ইলেকট্রিক গাড়ির গতি খুব সহজেই উঠে যায়, কারণ তাতে গিয়ার বদলানোর ঝামেলা নেই। ফলে এখানেও ০ থেকে ১০০ কিমি/ঘণ্টা গতি তুলতে সময় লাগবে ৭ সেকেণ্ডের থেকেও কম, যার সর্বোচ্চ গতিবেগ ২০০কিমি/ঘণ্টা। মনে করা হচ্ছে, টেসলা গাড়ির মতো এখানেও দু’টি মূল ইঞ্জিন থাকবে, প্রতিটা চাকা আলাদা ভাবে যাতে শক্তি পায়। থাকবে কুইক চার্জের সুবিধা। একবার পুরো চার্জ দিয়ে নিলে প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ কিমি যাত্রা করতে সক্ষম হবে।
লুকের দিক থেকেও গাড়িতে চমকের পর চমক। একঝলক দেখলে বিদেশি সেডান গাড়ির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলতে পারেন। চমত্কার বডি লাইন, ত্রিমাত্রিক ফ্রন্ট গ্রিল, এলইডি হেডল্যাম্প!
যদি বাইরেটা দেখেই আপনার পছন্দ হয়ে যায়, তবে অপেক্ষা করুন, ভিতরটা এখনও বাকি! কাঠ ও অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে বানানো ড্যাসবোর্ডে একঝলক তাকালে কিছুই দেখতে পাবেন না। কিন্তু গাড়ি চালু হওয়ামাত্র একটা কন্ট্রোল স্ক্রিন এবং একটা মিনি স্ক্রিন দেখতে পাবেন। যাঁরা পিছনের সিটে বসবেন, তাঁদের কথা মাথায় রেখে রিয়ার সিট অ্যাডজাস্ট করার সুযোগ রয়েছে, ফলে আপনি যতই লম্বা হন না কেন, গাড়িতে আর পা ভাঁজ করে যাত্রা করার সমস্যায় পোহাতে হবে না। অনেক গাড়ির মতো মাঝখানের মেঝে কিছুটা উঁচু হয়ে থাকার সমস্যাও এখানে নেই। আকারের দিক থেকে এটা একটু বড় হবে, যথাযথ সেডান যেমন হয়ে থাকে। প্রযুক্তির দিক থেকে গাড়িটা স্মার্ট। ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের মতো ব্যবস্থাও থাকবে এতে ।
আরও পড়ুন: অপমানের জবাব! পাল্টা স্পোর্টসকার বানিয়ে ফেললেন ল্যাম্বরগিনি
২০১৯ নাগাদ গাড়িটি বাজারে চলে আশার আশা প্রকাশ করেছে গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাটি। দাম ২৫ লক্ষ। কাজেই সাধারণ মধ্যবিত্ত কতটা এরকম গাড়ি কিনতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। বাজারে অন্য একটি সংস্থার ব্যাটারিচালিত গাড়ি আছে, কিন্তু তাদের গতি কম, অনেক সময় প্রয়োজন হয় চার্জ দিতে এবং দেখতে একেবারেই আকর্ষণীয় নয়। ফলে, ইভিশন সেই ছবি কতটা বদলাতে পারে, দেখা যাক!