প্রতীকী ছবি।
প্রিপেড পরিষেবায় মাসুলের হার বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে ভোডাফোন আইডিয়া ও এয়ারটেল। তিন দিন পরে একই পথে হাঁটার কথা জানিয়েছে রিলায়্যান্স-জিয়ো। মাসুল বাড়লে সংস্থাগুলির আয়ও বাড়ায় গ্রাহক পরিষেবা উন্নত হওয়ার আশা করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তবে এই মাসুল বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রকে টুইটে খোঁচা দিয়েছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। তাঁর অভিযোগ, দেশে সস্তার মোবাইল পরিষেবা নিয়ে বিজেপির গর্বের ফানুস ফেটে গিয়েছে। যদিও টেলিকমমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের পাল্টা টুইট, এখনও ভারতে মোবাইলের ডেটা পরিষেবার খরচ বিশ্বে সর্বনিম্ন।
প্রিপেড পরিষেবার মাসুল বাড়ার খবরে সোমবার ভোডাফোন এবং এয়ারটেলের শেয়ার দর অনেকটা ওঠে। বিএসই-তে ভোডাফোনের দর ১৪% উঠেছে। এনএসই-তে প্রায় ১৪%। এয়ারটেলের ক্ষেত্রে তা ছিল যথাক্রমে ৩.৬৭% ও ৪.১২%। জিয়ো শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত না হলেও তার মূল সংস্থার রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার দর বিএসই ও এনএসই-তে যথাক্রমে ২.২৮% ও ২.৩০% বাড়ে। আশিকা স্টক ব্রোকিংসের প্রেসিডেন্ট পরশ বোথরার আশা, মাসুল হার বৃদ্ধি সংস্থাগুলির গ্রাহক পিছু আয় কিছুটা বাড়িয়ে আর্থিক বোঝা লাঘব করতে সাহায্য করবে।
উপদেষ্টা সংস্থা পিডব্লিউসি-র পার্টনার (টেলিকম) আশিস শর্মার বক্তব্য, সংস্থাগুলি মাসুল বৃদ্ধির ফলে যে অতিরিক্ত আয় করবে, তা পরিকাঠামো উন্নত করার কাজে ব্যবহার করলে তবেই গ্রাহকেরা তার সুফল পাবেন।
কোটাক ইনস্টিটিউশনাল ইকুইটিজ়ের মতে, ভোডাফোন আইডিয়া ও এয়ারটেলের গ্রাহক সংখ্যা মোটামুটি একই থাকলে মাসুল বৃদ্ধির জেরে সুদ, কর, ডেপ্রিসিয়েশন ও অন্য বিধিবদ্ধ খরচ বাদে ওই দুই সংস্থার আয় যথাক্রমে ৮০০০-৯৫০০ কোটি ও ৭০০০-৮৫০০ কোটি টাকা বাড়বে। তবে সরকারকে ওই দুই সংস্থার বকেয়া অবিলম্বে মেটাতে হলে এই শিল্পের বাজারে প্রতিযোগিতা খর্ব হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রেটিং সংস্থা মুডি’জ়।
মাসুল হার নিয়ে বিশেষজ্ঞেরা যা-ই বলুন না কেন, বিষয়টিকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। রবিবার এ নিয়ে তোপ দেগেছিল কংগ্রেস। আর সোমবার টুইটে প্রিয়ঙ্কার অভিযোগ, বিজেপি তাদের ধনী বন্ধুদের সুবিধা দিতে লাগাতার আমজনতার পকেট কাটছে। গত ছ’বছরে সস্তায় মোবাইলের ইন্টারনেট ও ফোন করার গর্ব করলেও এখন সেই ফানুস ফেটে গিয়েছে। বিএসএনএল ও এমটিএনএল-কে দুর্বল করে বাকি সংস্থার মাসুল হার বৃদ্ধির রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে তারা।
ব্রিটিশ সংস্থাকে উদ্ধৃত করে রবিশঙ্করের পাল্টা দাবি, মাসুল বৃদ্ধির ঘোষণার পরেও ভারতে মোবাইলের ডেটা পরিষেবার খরচ সবচেয়ে কম। ২৩০টি দেশে তথ্যের ভিত্তিতে ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে প্রতি জিবি ডেটার খরচ ০.২৬ ডলার। ব্রিটেন ও আমেরিকায় তা যথাক্রমে ৬.৬৬ ডলার ও ১২.৩৭ ডলার। বিশ্বে গড় খরচ ৮.৫৩ ডলার।
অন্য একটি টুইটে তিনি বরং বলেছেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর সরকার ইউপিএ সরকারের কাছ থেকেই দামি ডেটা পরিষেবা উত্তরাধিকার হিসেবে পেয়েছিল। নিয়ন্ত্রক ট্রাইয়ের হিসেবে, ২০১৪ সালে প্রতি জিবি-র খরচ ছিল ২৬৮.৯৭ টাকা। এখন তা ১১.৭৮ টাকা। দুর্নীতিগ্রস্ত ইউপিএ সরকারের আমলে মোবাইল ফোন পরিষেবা বিশৃঙ্খল অবস্থায় ছিল। আমরাই তা ঠিক করে বরং গ্রাহকদের সন্তুষ্ট করে তা সম্প্রসারণ করেছি। বিএসএনএল এবং এমটিএনএল-কে পেশাদার ও লাভজনক করতে আনরা দায়বদ্ধ।’’