অমিত মিত্র
জিএসটি পরিষদের পরবর্তী বৈঠক আগামী ১৬ ডিসেম্বর। তার আগে ১৪ তারিখ ‘এমপাওয়ার্ড কমিটি’র চেয়ারম্যান হিসেবে সমস্ত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে ডেকেছেন পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। পণ্য-পরিষেবা করের (জিসএটি) বাইরে রাজ্যগুলির নিজেদের আয়ের সূত্র বা কর বসানোর ক্ষমতা নিয়ে আলোচনার কথা বলা হয়েছে সেখানে। কিন্তু শুক্রবার কলকাতায় এসে অমিতবাবুর ওই বৈঠক ডাকার এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তুললেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা ওই কমিটির সদস্য সুশীল মোদী।
তাঁর দাবি, জিএসটি চালু হওয়ার পরে ওই কমিটিকে নতুন করে আর কোনও কাজ দেওয়া হয়নি। তাই এ নিয়ে আলোচনার এক্তিয়ার তাদের নেই। মোদীর দাবি, বৈঠক আপাতত পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে অমিতবাবুকে চিঠিও দিয়েছেন তিনি।
অনেকেই বলছেন, জিএসটি নিয়ে প্রায় নিয়মিত কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অমিতবাবু বারবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তড়িঘড়ি ওই কর চালু করা নিয়ে। এ সবের পরে এ বার বৈঠক ডাকার এক্তিয়ার নিয়ে এই দড়ি টানাটানি সেই তিক্ততা আরও বাড়াতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। এ বিষয়ে অমিতবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তাঁর কাছ থেকে অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এ দিন জিএসটি নিয়ে ভারত চেম্বার অব কমার্সের সভা শেষে নিজেই ওই প্রসঙ্গ তোলেন মোদী। বলেন, ‘‘ভ্যাট ও জিএসটি-র রোডম্যাপ তৈরি এবং তা রূপায়ণের পরে নতুন করে ওই কমিটিকে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। তাই কমিটি জিএসটি-র বাইরে ওই সব বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারে না বলেই মনে করেন তিনি। যেখানে জিএসটি পরিষদ পুরোদমে কাজ করছে। তৈরি হয়ে গিয়েছে নতুন অর্থ কমিশনও। কেন্দ্র-রাজ্যের কর ভাগাভাগির বিষয়টি মূলত দেখে তারাই।
মোদীর দাবি, ‘‘অমিতবাবুর সঙ্গে গত কাল ফোনে কথা হয়েছে। বৈঠক পিছিয়ে দিয়ে আমি তাঁকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেছি।’’ তিনি জানান, বার্ষিক সভা ও কমিটির গভর্নিং বডি-র বৈঠকের পরে মূলত চারটি বিষয়ে আলোচনার কথা ছিল তার মধ্যে রয়েছে— জিএসটি-র বাইরে রাজ্যের আয় কী ভাবে সবচেয়ে ভাল ভাবে ব্যবহার করা যায়, তাদের কর বসানোর সুযোগ, নতুন অর্থ কমিশনের বিভিন্ন বিষয়।
কিন্তু মোদীর যুক্তি, মূলত রাজ্যগুলিতে একই হারে বিক্রয়কর ও ভ্যাট চালুর জন্যই কেন্দ্রের নির্দেশে ২০০০ সালে ওই কমিটি গড়া হয়। ২০০৮ সালের পরে তার মূল কাজ হয় জিএসটি-র রোডম্যাপ তৈরি। এখন জিএসটি চালুর পরে তাদের নতুন কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।