প্রতীকী ছবি।
দেশে ব্যবসার পরিবেশ সহজ করতে সরকারি পদক্ষেপের সাফল্য তুলে ধরে মাঝে-মধ্যেই বড়াই করেন কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা। দেশের চৌহদ্দিতে তো বটেই, বিদেশের মাটিতেও তার বিজ্ঞাপন তুলে ধরে লগ্নির ডাক দেন। তবে এ বার সেই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল বণিকসভা সিআইআইয়ের সমীক্ষা। রবিবার প্রকাশিত ওই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ব্যবসা করার পরিবেশ নিয়ে মোটেই খুশি নন শিল্প-কর্তারা। বরং তাঁদের অভিযোগ একেবারে তৃণমূল স্তরে সহজ পরিবেশ পাওয়া এখনও বেশ কষ্টকর। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বিপুল খরচ। আর এই দুই সমস্যা বেসরকারি সংস্থাগুলির ব্যবসা করার আগ্রাসী মনোভাবে প্রভাব ফেলছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বাস্তবের এই ছবিই লগ্নির পথে কাঁটা।
যদিও সমীক্ষায় এটাও উঠে এসেছে, আর্থিক বৃদ্ধির রথের চাকায় গতি আনতে সরকারের উদ্যোগ এবং ঘোষণাগুলিতে সন্তুষ্ট শিল্প। তারা আশা করছে, সেই সব পদক্ষেপ কর্পোরেট সংস্থাগুলির ব্যবসা করার আগ্রাসী মনোভাব বহাল রাখতেও সাহায্য করবে। যার সুফল হিসেবে চলতি অর্থবর্ষে তাদের আর্থিক ফলে চোখে পড়ার মতো উন্নতি চোখে পড়তে পারে।
সিআইআইয়ের ওই সমীক্ষা করা হয়েছে বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার ১১৭ জন চিফ এগ্জ়িকিউটিভ অফিসারের (সিইও) সঙ্গে কথা বলে। বণিকসভাটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‘ব্যবসা করার ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলির আগ্রাসী মনোভাবের উপরে কোন বিষয়গুলি প্রভাব ফেলছে, সেই প্রশ্নই করা হয়েছিল। বেশির ভাগ (৫১%) সিইও-র ইঙ্গিত, সহজে ব্যবসার পরিবেশ এখনও কঠিন তৃণমূল স্তরে। ৩২% সিইও ইঙ্গিত দিয়েছেন, তার পরেই বড় সমস্যা ব্যবসা করার বিপুল খরচ (মূলধনী খরচ বাদে অন্যান্য
সব কিছুর)।’’
প্রায় এক তৃতীয়াংশ শিল্প-কর্তার মতে, চাহিদার তুলনায় সংস্থাগুলি এখনও বাড়তি ক্ষমতা নিয়ে কাজ করছে। তবে ১১৭ জনের মধ্যে ৪৬% আশা করছেন, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসে (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) তাঁদের সংস্থার আয় গত ২০১৯-২০ সালের (করোনা হানার আগের বছর) প্রথমার্ধের তুলনায় বাড়বে ১০ শতাংশেরও বেশি।
সিআইআইয়ের দাবি, সমীক্ষায় কর্পোরেট মহলের ইঙ্গিত, আয় এবং মুনাফা— দুই ক্ষেত্রেই বৃদ্ধির আশা প্রাক-করোনা পর্বের থেকেও বেশি। জীবনের সব থেকে ভয়ানক আর্থিক ধাক্কা সহ্য করার পরেও শিল্প-কর্তারা মনে করছেন, তাঁদের সংস্থার আগ্রাসী মনোভাব ধরে রাখতে সহায়ক হয়েছে আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি আনতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ
এবং ঘোষণা।