সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
খনি ও খনিজের জমির উপরে কর চাপানোর আইনি অধিকার রাজ্যগুলির রয়েছে বলে রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেইসঙ্গে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন নয় সদস্যের বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, ১৯৮৯ সালে এ ব্যাপারে তাদের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় ভুল ছিল। খনি ও খনিজ আইনের অধীনে খনিজ পদার্থের স্বত্ব থেকে আয়ের (রয়্যালটি) একটি অংশ রাজ্যকে দেয় কেন্দ্র। কিন্তু তাকে কোনও ভাবেই কর বলা যায় না। ওই আইনেও এমন কোনও সংস্থান নেই, যার মাধ্যমে কর চাপানোর ব্যাপারে রাজ্যগুলিকে কেন্দ্র নিরস্ত করতে পারে। ভিন্নমত প্রকাশ করেছেন শুধু বিচারপতি বি ভি নাগারত্ন।
সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, এই রায়ের ফলে ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডের মতো প্রাকৃতিক সম্পদ সমৃদ্ধ রাজ্যগুলির রাজস্ব আদায়ের রাস্তা প্রশস্ত হল। লাভ হবে পশ্চিমবঙ্গেরও। মামলাকারী রাজ্যগুলির পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে, এই রায় অতীত থেকে কার্যকর (রেট্রোস্পেক্টিভ) হোক। যাতে তারা কেন্দ্রের সংগ্রহ করা করের উপরে নিজেদের ভাগ দাবি করতে পারে। কেন্দ্রের পক্ষে শুনানিতে অংশগ্রহণ করা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা অবশ্য এই দাবির তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, রায় ঘোষণার পর থেকে তা কার্যকর করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে দু’পক্ষকেই লিখিত ভাবে নিজেদের বক্তব্য পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। আগামী বুধবার পরবর্তী শুনানি।
১৯৮৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের সাত সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের বক্তব্য ছিল, সংসদে যে খনি আইন পাশ হয়েছে, তার ধারাগুলি রূপায়ণের ক্ষমতা শুধু কেন্দ্রের। রাজ্য শুধুমাত্র রয়্যালটি আদায় করতে পারে। কর চাপাতে পারে না। আজ শীর্ষ আদালত সেই যুক্তি খারিজ করেছে। বলেছে, জমি ও বাড়ির উপরে কর চাপাতে পারে রাজ্য। কর বসাতে পারে খনিজের স্বত্বের উপরেও। বিচারপতি নাগারত্নের অবশ্য বক্তব্য, রাজ্যের হাতে খনিজের জমির কর চাপানোর ক্ষমতা দেওয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত লাগতে পারে। ধাক্কা খেতে পারে খনন ক্ষেত্রের কর্মকাণ্ড।
এই মামলায় রাজ্যের হাতে কর আরোপের ক্ষমতা তুলে দেওয়ার বিরোধিতা করেছিল কেন্দ্র। তাদের বক্তব্য ছিল, রাজ্যগুলি নিজেদের মতো কর চাপালে গুরুত্বপূর্ণ খনিজগুলির দাম বাড়তে পারে। জাতীয় অর্থনীতির উপরে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে। যদিও খনিজ সমৃদ্ধ রাজ্যগুলির একাংশের অভিযোগ, মাটির নীচে বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ থাকা সত্ত্বেও তার সুবিধা তারা পাচ্ছে না। পিছিয়ে থাকছে আর্থিক ভাবে।