—প্রতীকী ছবি।
বড়দিনের আগের সপ্তাহে ফের বাজারে নেমেছে ধস। হাজার পয়েন্টের বেশি পড়ল সেনসেক্স। নিফটি ৫০-এর অবস্থাও তথৈবচ। এই নিয়ে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে পরপর দু’দিন নিম্নমুখী হল বাজার। বছর শেষের আগে কিছুতেই ‘ভালুকের আঁচড়’ এড়াতে পারছেন না স্টকের লগ্নিকারীরা। কয়েক কোটি টাকা লোকসান হওয়ায় বেজায় হতাশ হয়ে পড়েছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর আবারও ৮০ হাজারের ঘরে নেমে আসে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (বিএসই)। দিনের শেষে ৮০,৬৮৪.৪৫ পয়েন্টে গিয়ে থেমে যায় সেনসেক্স। এ দিন এই সূচক নেমেছে ১,০৬৪.১২ পয়েন্ট। শতাংশের বিচারে অঙ্কটা ১.৩০। নিফটি ৫০-এ আবার ৩৩২.২৫ পয়েন্টের পতন দেখা গিয়েছে।
ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (এনএসই) শেয়ার সূচকের দৌড় শেষ হয়েছে ২৪,৩৩৬ পয়েন্টে। সপ্তাহের দ্বিতীয় লেনদেনের দিনে এই বাজারের লেখচিত্র নেমেছে ১.৩৫ শতাংশ। সকালে সেনসেক্স এবং নিফটি খুলেছিল যথাক্রমে ৮১,৫১১.৮১ ও ২৪,৫৮৪.৮০ পয়েন্টে। দুই বাজারই দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৮১,৬১৩ এবং ২৪,৬২৪ পয়েন্টে চড়েছে বলে জানিয়েছে বিএসই ও এনএসই কর্তৃপক্ষ।
শেয়ার বাজারের এই পতনের নেপথ্যে দু’টি কারণের কথা বলেছেন স্টক বিশেষজ্ঞেরা। প্রথমত, কিছু দিনের মধ্যেই সুদের হারের ব্যাপারে বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। ওই হার কমলে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থাগুলির বেশি লাভ করার সম্ভাবনা বাড়বে। সে ক্ষেত্রে আরও চাঙ্গা হবে আমেরিকার শেয়ার বাজার। আর সেই আশাতেই ভারতীয় শেয়ার বাজারের থেকে মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন বিদেশি লগ্নিকারীদের একটা বড় অংশ।
অন্য দিকে, নভেম্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ডলারের নিরিখে হু হু করে কমেছে ভারতীয় টাকার দাম। বর্তমানে রেকর্ড পতনের পর সেটি ৮৪.৯২তে নেমে এসেছে। ফলে এ দেশের শেয়ার বাজারে লগ্নিতে বিনিয়োগকারীদের লাভের অঙ্ক কমেছে। এর জেরে বম্বে ও ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে লগ্নির উৎসাহ হারাচ্ছেন তাঁরা।
ব্রোকারেজ ফার্মগুলির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ দিন ১,৪৯৭টি শেয়ারের দাম বেড়েছে। দর পড়েছে ২,৩৬০টি স্টকের। আর মাত্র ৮৫টি শেয়ার অপরিবর্তিত থেকে গিয়েছে। বিএসইতে ছোট ও মাঝারি পুঁজির সংস্থাগুলির সূচক নেমেছে ০.৫ শতাংশ। ক্যাটেগরি ভিত্তিক সমস্ত সংস্থাই লাল জ়োনে শেষ করেছে। গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থা, সরকারি-বেসরকারি ব্যাঙ্ক, শক্তি, সংকর ধাতু এবং তেলও গ্যাস সংস্থার শেয়ারের দর কমেছে এক শতাংশ।
এ দিন নিফটিতে সর্বাধিক লোকসান হয়েছে শ্রীরাম ফিন্যান্স, ভারতী এয়ারটেল, গ্রাসিম ইন্ডাস্ট্রিজ়, হিরো মোটোকর্প এবং জেএসডব্লু স্টিলের স্টকে। অন্য দিকে লাভের মুখ দেখিয়েছে একমাত্র সিপলা।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: শেয়ার বাজারে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকিসাপেক্ষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই স্টকে বিনিয়োগ করুন। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হলে আনন্দবাজার অনলাইন কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়।)