এত দিন ছিল কাগুজে নথি এবং প্লাস্টিকের কার্ড। এ বার মিলবে ‘চিপ’ ভিত্তিক স্মার্ট কার্ড। প্রতীকী ছবি।
এত দিন ছিল কাগুজে নথি। সেই সঙ্গে প্লাস্টিকের কার্ড। এ বার মিলবে ‘চিপ’ ভিত্তিক স্মার্ট কার্ড। তাতে ভরা থাকবে প্রয়োজনীয় সব তথ্য। রাজ্য পরিবহণ দফতর ও গাড়ি শিল্প সূত্রের খবর, মে মাস থেকে গাড়ি চালানোর ছাড়পত্র (ড্রাইভিং লাইসেন্স) এবং গাড়ি নথিভুক্তির শংসাপত্রের (রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা আরসি) কার্ড এ ভাবেই হচ্ছে আক্ষরিক অর্থে ‘স্মার্ট কার্ড’।
শুক্রবার কলকাতায় গাড়ি বিক্রেতাদের (ডিলার) সংগঠন ফাডার রাজ্য শাখার ‘টাউন হল’ বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রেক্ষিতে নতুন স্মার্ট কার্ডের বিষয়টিও ওঠে। পরিবহণ দফতর ও শিল্প সূত্রে খবর, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা আরসি-র ওই স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির তথ্য যাচাই অনেক সহজ হবে। পদ্ধতিগত ভাবে গাড়ি চালানোর পরীক্ষার পরে দেওয়া হবে ড্রাইভিং লাইসেন্সের কাগুজে নথি। লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড ডাক মারফত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ঠিকানায় পাঠানো হবে। যাঁদের ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে, তাঁরাও স্মার্ট কার্ড নেওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে কী ভাবে সেটা পরিষ্কার নয় এখনও। নতুন গাড়ি নথিভুক্ত (রেজিস্ট্রেশন) করলেও মিলবে চিপ ভিত্তিক স্মার্ট কার্ড। তবে সেটি বিলির পদ্ধতিও স্পষ্ট নয়। জানা গিয়েছে, কার্ড নিতে বাড়তি টাকা লাগবে। যেমন পিভিসি আধার কার্ড নিতে লাগে। গোড়ায় কলকাতাতেই কার্ড বণ্টন শুরু হবে। পরে ধাপে ধাপে চালু হবে রাজ্যের অন্যত্র।
ফাডার রাজ্য শাখার চেয়ারপার্সন সোহম মিশ্র বলেন, রাজ্যের কাছে তাঁদের আর্জি, গাড়ি ক্রেতার হাতে তুলে দেওয়ার আগেই বাধ্যতামূলক ভাবে তাতে বিশেষ সুরক্ষাযুক্ত নম্বরের প্লেট (এইচএসআরপি) লাগানোর পথ যাতে মসৃণ হয় তা নিশ্চিত করুক তারা। বিক্রেতা মহলের (ডিলার) বক্তব্য, মূলত গাড়ি নথিভুক্তির সময়ে সব কর দেওয়ার পরেও নম্বর পেতে ক্রেতার ২৪-৪৮ ঘণ্টা লাগে। এর পরে এইচএসআরপি করাতে আরও এক দিন। ফলে ক্রেতা ক্ষুব্ধ হন। ফাডার আর্জি, নথিভুক্তির সময়েই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে নম্বর মিললে দ্রুত এইচএসআরপি-ও দেওয়া যাবে। এখন বিক্রেতা গাড়ি নির্মাতার অনুমোদনপ্রাপ্ত হলে, তাকে প্রতি বছর আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরে গিয়ে বাণিজ্যের শংসাপত্র (ট্রেড সার্টিফিকেট) পুনর্নবীকরণ করাতে হয়। ব্যবসার পরিবেশ সহজ করতে সেই মেয়াদ পাঁচ বছর করার আর্জিও জানানো হয়েছে।
এ দিন সোহম জানান, ২০২১-২২ সালের তুলনায় গত অর্থবর্ষে (২০২২-২৩) পশ্চিমবঙ্গে সব ধরনের গাড়ি বিক্রি বেড়েছে। দু’চাকার বৈদ্যুতিক গাড়ির ৩২০%, যাত্রিবাহী বৈদ্যুতিকের ২৪১%। তবে চাহিদা আরও বাড়াতে সুস্পষ্ট বৈদ্যুতিক গাড়ির নীতি তৈরির সওয়াল করেন তাঁরা। এখন বৈদ্যুতিক, সিএনজি ইত্যাদি দূষণহীন গাড়ির জন্য সার্বিক নীতি আছে রাজ্যে। ফলে আর্থিক সুবিধা তেমন নয়। ফাডা এটাও বলেছে, নতুন গাড়ির চাহিদা বাড়াতে পুরনোগুলি বাতিলের নীতি জরুরি।