ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা তোলার নির্দেশ নিয়ে আশঙ্কা ছিলই। সেই কাঁটা কতটা বিঁধতে পারে, সপ্তাহের শেষে তা টের পেল ক্ষুদ্র শিল্প। তাদের দাবি, এর জেরে এখন বহু ছোট সংস্থারই ব্যবসা বন্ধের জোগাড়।
ছোট সংস্থাগুলির যুক্তি, ব্যবসা চালাতে ও কর্মীদের বেতন দিতে সপ্তাহে তাদের লাগে অন্তত ৫০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা। ফলে এখন কর্মীদের বেতন দিতে মুশকিল হচ্ছে। যন্ত্র সারাই না-হওয়ায় উৎপাদনই আটকে যাচ্ছে। তাই নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেও ক্ষুদ্র শিল্পমহলের আর্জি, তাদের স্বার্থরক্ষায় নিয়ম কিছুটা শিথিল করা হোক।
ক্ষুদ্র শিল্পের সংগঠন ফসমি-র অন্যতম সদস্য হেমন্ত সারাওগির করোগে়টেড বাক্স তৈরির কারখানা হাওড়ায়। তিনি জানান, সপ্তাহে সেখানে খরচ প্রায় ৫০ হাজার। সারাওগির দাবি, ‘‘এমনিতে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে দিনে যত খুশি লেনদেন করা যায়। এখনও তা করতে দিলে ভাল। ওই টাকা যে সংস্থার কাজেই ব্যবহৃত হবে, সেই মুচলেকাও দিতে পারি।’’
নগদের অভাবে ধুঁকছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৌখালিতে রুপোর গয়না, বাসন ইত্যাদি তৈরির ব্যবসাও। সংশ্লিষ্ট শিল্প সংগঠনের চেয়ারম্যান তাপস মণ্ডল জানান, এই কাজের জন্য সংস্থাকে সপ্তাহে লক্ষাধিক টাকা তুলে বড়বাজারে রুপোর বাট কিনতে হয়। আপাতত সেই পথ বন্ধ। কাজ বন্ধ প্রায় ৮০% সংস্থায়। ধার-বাকিতে সংসার চালাচ্ছে ওই শিল্পে যুক্ত প্রায় দু’হাজার পরিবার।
আবার কেন্দ্রের থেকে বড় মাপের বরাত পেয়েও সময়ে শেষ করা নিয়ে চিন্তিত শহরের এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি জানান, কর্মীদের প্রাপ্য প্রায় এক লক্ষ টাকা দেওয়া যায়নি। তাঁর আক্ষেপ, আগামী সপ্তাহের গোড়ায় কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এই পরিস্থিতিতে তাঁদের বাড়তি খাটতে বলবেন কী করে!
ফেডারেশন অব অ্যাসোসিয়েশন অব কটেজ অ্যান্ড স্মল ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট হিতাংশু গুহ ও ফসমির সচিব হিরণ্ময় গঙ্গোপাধ্যায়ের আর্জি, ছোট শিল্পের সমস্যা খতিয়ে দেখে
তাদের স্বার্থে নিয়মকানুন কিছুটা শিথিল করুক কেন্দ্র।