আশা, আশঙ্কায় দুলছে বাজার

পরিসংখ্যান বলছে, জুলাইয়ে রফতানি আগের বছরের তুলনায় ২.২% বেড়েছে। আমদানি ১০.৪% কমেছে। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি  নেমেছে ১,৩৪৩ কোটিতে।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৯ ০৩:৫৫
Share:

ছবি এএফপি।

গত সপ্তাহে বেশ কিছু পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, যা একই সঙ্গে আশা ও আশঙ্কা জাগাচ্ছে লগ্নিকারীদের মনে। যার হাত ধরেই এক দিন এক ধাক্কায় অনেকটা বেশি উঠতে, আবার কোনও দিন বেশ খানিকটা নেমে যেতে দেখা গিয়েছে শেয়ার বাজারকে।

Advertisement

পরিসংখ্যান বলছে, জুলাইয়ে রফতানি আগের বছরের তুলনায় ২.২% বেড়েছে। আমদানি ১০.৪% কমেছে। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি নেমেছে ১,৩৪৩ কোটিতে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ৯ অগস্ট শেষ হওয়া সপ্তাহে ভারতের বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার বেড়ে হয়েছে ৪৩,০৫৭ কোটি ডলার। যা নতুন রেকর্ড। জুলাইয়ে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি অনেকটাই কমে হয়েছে ১.০৮%। খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ৩.১৫%। যা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ৪ শতাংশের (+/-২%) লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেশ কম।

এমনিতে এই সব তথ্য ভাল মনে হলেও, মূল্যবৃদ্ধি এতটা নামা বাজারে চাহিদা না-থাকার লক্ষণ বলেই মনে করা হচ্ছে। চাহিদায় টান পড়ায় কাজ হারাচ্ছেন বহু মানুষ। গাড়ি, ভোগ্যপণ্য বিক্রি তলানিতে। নতুন লগ্নি না-হওয়ায় কর্মসংস্থানের ছবিটাও ভাল নয়। গত এক-দু’সপ্তাহে যে সব পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে জার্মানি, ব্রিটেনের মতো ইউরোপীয় দেশ, আমেরিকা, চিন, জাপানের অর্থনীতি বেশ নড়বড়ে। ফের চোখ রাঙাচ্ছে শুল্ক-যুদ্ধ। এই অবস্থায় ভারতের পক্ষে মাথা উঁচু করে থাকা চ্যালেঞ্জ বলেই ধারণা। আর এ জন্যই মাঝেমধ্যে ভাল খবরে সূচক ঝলসে উঠলেও, তা দু’একদিনের মধ্যেই পড়ছে প্রতিকূল আবহাওয়ায়।

Advertisement

শুধু সূচকই নয়, শেয়ার ভিত্তিক (ইকুইটি) ফান্ডগুলিতেও দুর্বলতা বেশ স্পষ্ট। জুন পর্যন্ত সেগুলির ন্যাভ যতটা বেড়েছিল, তার অনেকটাই হারিয়েছে গত দেড় মাসে। যাঁরা ২-৩ বছর ধরে ইকুইটি ফান্ডে এসআইপি করলেও, তেমন লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে না। ভবিষ্যৎও যে খুব আশাপ্রদ, অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা দেখে তা মনে হচ্ছে না। তবে একটাই আশার কথা, দেরিতে এলেও অগস্টের বৃষ্টি জুন, জুলাইয়ের ঘাটতি কিছুটা পুষিয়েছে। যদিও সারা দেশে এক রকম বৃষ্টি হয়নি।

এ দিকে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট ৩৫ বেসিস পয়েন্ট কমানোর পরে অনেক ব্যাঙ্কই ঋণে সুদ কমাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে সুদ কমছে জমাতেও। শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড, ব্যাঙ্ক জমা— সর্বত্রই আয়ের মাত্রা কমায়, কোথায় টাকা রাখবেন তা নিয়ে মানুষ ধন্দে। এরই মধ্যে ঋণপত্র নির্ভর (ডেট) ফান্ডগুলি তুলনামূলক ভাল জায়গায়। তবে এতে লগ্নি করতে হবে সুরক্ষার দিকটা ভাল করে দেখে। স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ এখনও বেশ ভাল। তবে আশঙ্কা, পুজোর মুখে তা কমতে পারে। ফলে যেখানেই লগ্নি করা হোক না কেন, আগে ভাল করে খোঁজ নিতে হবে।

(মতামত ব্যক্তিগত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement