—প্রতীকী ছবি।
চলতি আর্থিক বছরের (পড়ুন ২০২৪-’২৫) শেষ সপ্তাহে ঘুরে দাঁড়াল বাজার। মার্চে এখনও পর্যন্ত সাত শতাংশ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে সেনসেক্স এবং নিফটি। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের জুনের পর এটাই বম্বে এবং ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সেরা পারফরম্যান্স। গত অক্টোবর থেকে শেয়ার সূচক ক্রমাগত নামতে থাকায় মাথায় হাত পরে লগ্নিকারীদের। চৈত্র সংক্রান্তির আগে স্টকের ষাঁড় ফের ছুটতে শুরু করায় মুখে হাসি ফুটেছে তাঁদের।
সোমবার, ২৪ মার্চ বাজার বন্ধ হলে ৭৭,৯৮৪.৩৮ পয়েন্টে দৌড় থামায় সেনসেক্স। ১,০৭৮.৮৮ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের (বিএসই) শেয়ার সূচক। অর্থাৎ এতে ১.৪০ শতাংশের বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭৮,১০৭ পয়েন্টে উঠেছিল সূচক।
অন্য দিকে এ দিন ২৩,৬৫৮.৩৫ পয়েন্টে ওঠে নিফটি ৫০-এর সূচক। এতে ৩০৭.৯৫ পয়েন্টের বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গিয়েছে, যা ১.৩২ শতাংশ। নিফটি-৫০র দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ উত্থান ছিল ২৩,৭০৮ পয়েন্ট। এই নিয়ে টানা ছ’টি লেনদেনের দিনে ঊর্ধ্বমুখী থাকল বাজার।
ব্রোকারেজ ফার্মগুলির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ চাঙ্গা থাকায় ২,৩৭১টি শেয়ারের বেড়েছে দাম। দর পড়েছে ১,৬০২টি স্টকের। এ ছাড়া ১৫৩টি শেয়ারের দামের কোনও পরিবর্তন হয়নি। ব্যাঙ্ক, ক্যাপিটাল গুড্স, তথ্যপ্রযুক্তি, তেল ও গ্যাস, শক্তি, রিয়্যাল এস্টেটের স্টকের দর এক থেকে তিন শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এ দিন বিএসইতে মাঝারি এবং ছোট পুঁজির সংস্থাগুলির শেয়ার অন্তত এক শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। নিফটিতে সর্বাধিক লাভবান হয়েছেন কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক, এনটিপিসি, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই), পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন এবং টেক মাহিন্দ্রার লগ্নিকারীরা। অন্য দিকে মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা, টাইটান, ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক, ট্রেন্ট ও ভারতী এয়ারটেলের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের মুখ দেখতে হয়েছে।
ব্রোকারেজ ফার্মগুলি জানিয়েছে, বাজার চাঙ্গা হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মাঝারি এবং ছোট পুঁজির সংস্থাগুলির স্টক নিজেদের জায়গা পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়েছে। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে নিফটি মিড ক্যাপ ৭.৭৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এ দিনের পর সেটা ১০ শতাংশে পৌঁছেছে। নিফটি স্মল ক্যাপ ১০০র সূচক আবার ৮.৬৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এর মাসিক বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১২ শতাংশ।
আর্থিক বিশ্লেষকেরা শেয়ার বাজারের এই উত্থানের নেপথ্যে একাধিক কারণের কথা বলেছেন। তাঁদের দাবি, আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ‘ফেডারেল রিজ়ার্ভ’ সুদের হার কমানোর পূর্বাভাস বজায় রেখেছে। আর তাই মুখ ফিরিয়ে থাকা বিদেশি লগ্নিকারীরা এখানে ফিরতে শুরু করেছেন। গত কয়েক দিন কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে ভারতীয় টাকার দাম। কমেছে বাণিজ্য ঘাটতি। ফলে রকেট গতিতে চড়ছে শেয়ার সূচক।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: শেয়ার বাজারে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই স্টকে বিনিয়োগ করুন। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হলে আনন্দবাজার ডট কম কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়।)