হোয়াইট হাউসে ইরাক-পরিস্থিতিতে আলো ফেললেন ওবামা (বাঁ দিকে)। নিষেধাজ্ঞা জারির পর ডেয়ারি পরিদর্শনে পুতিন। ছবি: রয়টার্স।
ইরাকে আমেরিকার বিমানহানায় ওবামার ছাড়পত্র। আর ওবামার দেশের বিরুদ্ধে বাণিজ্যে পুতিনের নিষেধাজ্ঞা। আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় ঘনীভূত হওয়া এই জোড়া সঙ্কটই প্রায় চার সপ্তাহের সর্বনিম্ন অঙ্কে টেনে নামাল শেয়ার বাজারকে।
শুক্রবার সেনসেক্স নামল আরও ২৬০ পয়েন্ট। এই নিয়ে টানা তিন দিনে মোট পতন ৫৭৯ অঙ্ক। দিনের শেষে সূচক দাঁড়িয়েছে ২৫,৩২৯.১৪ অঙ্কে। একই কারণে এ দিন ডলারের সাপেক্ষে টাকার দামও এক সময় ৫২ পয়সা কমে পাঁচ মাসের ন্যূনতম অঙ্কে গিয়ে ঠেকে। তবে দিনের শেষে ৭ পয়সা বেড়েছে ভারতীয় মুদ্রার দর। এক ডলার দাঁড়িয়েছে ৬১.১৫ টাকায়। সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, মূলত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হস্তক্ষেপেই টাকা পতন এড়িয়েছে।
বস্তুত, এই মুহূর্তে বিভিন্ন দেশের মধ্যে তীব্র হওয়া টানাপড়েন সারা বিশ্বকেই উদ্বেগে রেখেছে। সন্ত্রাসবাদীদের ঠেকাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁর দেশের সেনাবাহিনীকে উত্তর ইরাকে ‘নিয়ন্ত্রিত’ বিমানহানার অনুমতি দিয়েছেন। এই খবরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাজারে দ্রুত শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে যায়। তার সঙ্গে আবার যোগ হয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পশ্চিমী দেশগুলি থেকে খাদ্যপণ্য আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো। যা আসলে ইউক্রেন সমস্যার জন্য দায়ী করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকা ও ইউরোপীয় দেশগুলির নেওয়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থারই প্রতিহিংসাপূর্ণ জবাব। ইন্ধন জুগিয়েছে লিবিয়া এবং ইজরায়েল-গাজার রাজনৈতিক উত্তেজনাও। আর এ সবের জেরেই এশিয়া ও ইউরোপের বেশির ভাগ বাজার পড়ে যায় এ দিন। এই সব কিছুর ধাক্কা এড়াতে পারেনি ভারতও।
আন্তর্জাতিক সঙ্কটের কারণে দিনভর বিশ্ব বাজারে তেলের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। ফলে দিনের মাঝমাঝি সময়ে ভারতে আশঙ্কাজনক ভাবে পড়তে থাকে টাকা। এর প্রভাবও পড়ে বাজারের উপর। অবশ্য সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, পরিস্থিতি সঙ্গিন দেখে শীর্ষ ব্যাঙ্ক ডলার বেচেছে। যে কারণে বাজার বন্ধের সময় টাকার দাম কিছুটা বাড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতির মতো সঙ্কটে তেলের দাম বাড়ে। আর ভারত ৮০% অশোধিত তেলই আমদানি করে। তাই এর দাম বাড়লে তা এ দেশের অর্থনীতির উপর বড়সড় আঘাত। কারণ তাতে বাড়ে চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ঘাটতি। দুর্বল হয় অর্থনীতি। যা আঘাত হানে বাজারের উপর।