ফাইল চিত্র।
সাত দশকের সম্পর্কের পাকাপাকি বিচ্ছেদ এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তবে ২০১৬ সাল থেকে যুযুধান টাটা গোষ্ঠী ও সাইরাস মিস্ত্রির পরিবারের ছাড়াছাড়িটা অন্তত নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় কি না, সেটা দেখার কৌতূহলও ক্রমশ দানা বাঁধছে সংশ্লিষ্ট মহলে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার শাপুরজি পালোনজি (এসপি) গোষ্ঠী জানাল, টাটাদের সঙ্গে ৭০ বছরের গাঁটছড়া খোলার পরিকল্পনা সুপ্রিম কোর্টে জমা দিয়েছে তারা। যেখানে টাটা গোষ্ঠীর হোল্ডিং কোম্পানি টাটা সন্সে নিজেদের ১৮.৩৭% অংশীদারির মূল্যায়ন ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে। এই এসপি গোষ্ঠীর প্রোমোটারই সাইরাস মিস্ত্রির পরিবার। যে সাইরাস, পালোনজি মিস্ত্রির ছোট ছেলে এবং যাঁকে চার বছর আগে আচমকাই তাদের চেয়ারম্যান পদ থেকে বিতাড়িত করে টাটারা।
সম্প্রতি মিস্ত্রিরা বলেছিল, টাটায় অংশীদারি ছাড়ার জন্য ন্যায্য পাওনা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি। কারণ, কোনও ভাবেই আর জোট বেঁধে থাকা সম্ভব নয়। তাদেরও আর একসঙ্গে থাকার ইচ্ছে নেই বুঝিয়ে তখনই শাপুরজিদের ভাগ কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেয় টাটারা। যে শেয়ারের মোট মূল্য সেই সময় ছিল প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা।
এ দিন শাপুরজিরা এক বিবৃতিতে বলেছে, টাটা সন্স হল দু’টি গোষ্ঠীর সংস্থা। যেখানে টাটা গোষ্ঠীর মধ্যে পড়ে টাটা ট্রাস্ট, টাটা পরিবারের সদস্যেরা ও টাটাদের সমস্ত সংস্থা। যাদের অংশীদারি মোট শেয়ার মূলধনের ৮১.৬%। আর মিস্ত্রি পরিবারের বাকি ১৮.৩৭%। তাদের দাবি, এই টাটা সন্সের মোট মূল্য স্থির হয় তার নথিভুক্ত শেয়ারের মোট বাজারমূল্য, অনথিভুক্ত শেয়ার, ব্র্যান্ড মূল্য, হাতে থাকা নগদ ও স্থাবর সম্পত্তির ভিত্তিতে। সেই নিরিখেই ওই ১৮.৩৭ শতাংশের মূল্যায়ন দাঁড়ায় ১,৭৫,০০০ কোটি টাকারও বেশি।
বিভাজন পরিকল্পনায় এসপি গোষ্ঠীর দাবি, শেয়ার হোক বা ব্র্যান্ড, ভাগাভাগি যেন দু’পক্ষের মোট অংশীদারির অনুপাতেই হয়। অনথিভুক্ত শেয়ারের মূল্যায়ন নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে করানো যায়, যা নিট ঋণের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভাগ হতে পারে। নিট ঋণের প্রেক্ষিতে ব্র্যান্ড ভ্যালুর ভাগ নগদে বা নথিভুক্ত সিকিউরিটিতেও দেওয়া যেতে পারে। তবে টাটা গোষ্ঠীর অনথিভুক্ত সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে মূল্যায়ন করা হবে দু’তরফের নির্বাচিত ভ্যালুয়ারকে দিয়েই। সে ক্ষেত্রেও ভাগাভাগি হতে পারে নগদে বা নথিভুক্ত সিকিউরিটির মাধ্যমে বা দুইয়ের সমন্বয়ে।