কলকাতা থেকেও উড়ান ছিল গো ফার্স্টের। ফাইল ছবি।
যখনই দেশে কোনও বিমান সংস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে, অন্য সংস্থার উড়ানে ভাড়া বাড়তে দেখা গিয়েছে হু হু করে। নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা হয়েছে যাত্রীদের। গো ফার্স্ট নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে অর্ধেকের বেশি বিমান বসিয়ে দেওয়ার পরে এবং কিছু দিন যাবৎ সমস্ত উড়ান বাতিল করায় ফের সেটাই ঘটছে। মূলত যে সমস্ত আকাশপথে তাদের বিমান পাড়ি দিত, সেই রুটগুলিতে অন্য সংস্থার উড়ানে যাত্রী ভাড়া বাড়ছে। প্রধানত দিল্লি-মুম্বই থেকে। ফলে ফিরেছে পুরনো প্রশ্ন, যাত্রীদের স্বার্থ রক্ষার জন্য কেন হস্তক্ষেপ করছে না বিমান নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ।
কলকাতা থেকেও উড়ান ছিল গো ফার্স্টের। তবে সাকুল্যে তিনটি। দিল্লি, পোর্টব্লেয়ার, বাগডোগরায় একটি করে। তাই এখানে ভাড়া বৃদ্ধির ধাক্কা কম। ট্রাভেল এজেন্ট ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার পূর্ব ভারতের চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবির কথায়, “তিনটি রুটে বড়জোর ৩০০ যাত্রী অন্য উড়ানের টিকিট কাটছেন। তাতে ভাড়ার তেমন হেরফের হওয়ার কথা নয়। কিন্তু দিল্লি-মুম্বই থেকে অন্য শহরের উড়ানে তা বাড়ছে। অন্য সংস্থা যত বেশি যাত্রী পাচ্ছে, ততই বাড়াচ্ছে ভাড়া।”
ট্রাভেল এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া-র পূর্ব ভারতের সম্পাদক অঞ্জনি ধানুকার অবশ্য দাবি, “কলকাতা থেকে বাগডোগরা রুটেও ভাড়া বেড়েছে। তবে গো ফার্স্ট সস্তার উড়ান সংস্থা। মূলত ট্রেনের যাত্রীরা একটু বেশি টাকা দিয়ে উড়ানে যেতেন। এখন উড়ান সংস্থা বন্ধ হওয়ায় অনেকে ট্রেনেই ফিরে যাচ্ছেন।”
আপাতত ১২ মে পর্যন্ত সমস্ত উড়ান বন্ধ গো ফার্স্টের। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, সংস্থায় বড় অঙ্কের লগ্নি না হলে তাদের পক্ষে আকাশে ডানা মেলা মুশকিল। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, দেশে যাত্রী উড়ানের বাজারে গো ফার্স্টের দখল ছিল মাত্র ৭%। ৫৩টি বিমান ৩৪টি শহরে পরিষেবা দিত। প্রতি দিনের গড় উড়ান ২০০টি। সংস্থার এক কর্তার কথায়, “কলকাতা থেকে আগে ১৭টি উড়ান ছিল। করোনায় আর্থিক ধাক্কা লাগার পরে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সংস্থা। পরে অন্যান্য সংস্থা পূর্ববর্তী সব উড়ান ফেরালেও, আমরা পারিনি। কলকাতা থেকে দিল্লি, পোর্টব্লেয়ার, বাগডোগরায় একটি করে আর বাগডোগরা থেকে দিল্লি, গুয়াহাটিতে চলছিল শুধু।”
গো ফার্স্ট জানিয়েছিল, উড়ান বাতিল হওয়ায় টিকিটের টাকা ফেরানো হবে যাত্রীদের। অঞ্জনির অভিযোগ, কবে সেই টাকা ফেরানো হবে কেউ জানেন না। ট্রাভেল এজেন্টদেরও বহু টাকা আটকে গিয়েছে। একই অভিযোগ করেছেন অনিলও।