Sensex

বাজারে ধস, পতন ১৬০০

বাজার মহলের দাবি, প্রায় দেড় বছর পরে এত বড় পতন দেখল দেশের শেয়ার সূচক। তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই ‘সংশোধন’ আখ্যা দিয়ে একে স্বাগত জানিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:১৮
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

শেয়ার বাজার যে ভাবে উপরের দিকে ছুটছিল, তাতে বড় মাপের পতনের আশঙ্কা ছিলই। বুধবার সেই পতন দেখলেন লগ্নিকারীরা। সেনসেক্স এক ধাক্কায় পড়ে গেল ১৬২৮.০১ পয়েন্ট। ৭৩ হাজারের ঘর থেকে নেমে ফিরে গেল ৭১ হাজারে। থামল ৭১,৫০০.৭৬ অঙ্কে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৪.৫৯ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ হারালেন লগ্নিকারীরা। নিফ্‌টির পতন হয়েছে ৪৬০.৩৫। বাজার বন্ধের সময় সূচকটি এসে দাঁড়িয়েছে ২১,৫৭১.৯৫-এ।

Advertisement

বাজার মহলের দাবি, প্রায় দেড় বছর পরে এত বড় পতন দেখল দেশের শেয়ার সূচক। তবে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই ‘সংশোধন’ আখ্যা দিয়ে একে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, উত্থানের পরে বাজারকে শক্ত জমির উপর দাঁড় করাতে এই পতন জরুরি ছিল। এর ফলে চড়া বাজারে লগ্নিকারীদের সামনে ভাল সংস্থার শেয়ার কেনার সুযোগও খুলেছে।

ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং আমেরিকায় সুদ কমার সম্ভাবনা ক্ষীণ হতে থাকা— এই দু’টিই ধসের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের মতে, অনিশ্চয়তার আঁচ পেয়ে বহু লগ্নিকারী শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা ঘরে তুলেছেন। অবস্থার উন্নতি না হলে বাজার আরও পড়তে পারে।

Advertisement

এ দিন বিশ্ব জুড়ে বেশির ভাগ শেয়ার বাজারই ছিল নিম্নমুখী। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা
বৃদ্ধির আশঙ্কা উদ্বিগ্ন করেছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিকে। এই আবস্থায় ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলি সব থেকে বেশি ভুগতে পারে, এমন ভাবনা থেকেই এ দেশে শেয়ার বিক্রি করে হাত খালি করছে তারা। বুধবার ওই সব সংস্থা প্রায় ১০,৫৭৮.১৩ কোটি টাকার শেয়ার বেচেছে। বিশেষজ্ঞ কমল পারেখ বলেন, ‘‘সুদ এবং ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে ছবিটা ফের আশাজনক না হলে বিদেশি লগ্নিকারীরা শেয়ার বিক্রিতে রাশ টানবে না। ফলে আগামী দিনে সূচক আরও পড়তে পারে।’’

বাজার বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দী বলেন, ভারতের পরে ব্রিটেন ও আমেরিকায় সম্প্রতি ফের মাথা তুলেছে মূল্যবৃদ্ধির হার। বিশ্ব জুড়ে ঘটতে থাকা বিভিন্ন বিষয় ধাক্কা দিয়েছে। তা ছাড়া, ভারতে ছোট ও মাঝারি মূলধনের সংস্থাগুলিতে সম্প্রতি লগ্নির বহর যে ভাবে বেড়েছে, তা তাদের আর্থিক সম্ভাবনার নিরিখে বেমানান। তাই এ দিন তাদের দরও ভাল রকম পড়েছে। আরও পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

তবে এই পতনে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ আছে বলে মনে করছেন না ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর বিনয় কুমার আগরওয়াল। তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকায় ঋণপত্রের আয় বা ইল্ড বাড়ায় নতুন বন্ডে সুদ বাড়ছে। এই অবস্থায় সে দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ কমাবে বলে যে পূর্বাভাস দিয়েছিল, তা থেকে তারা পিছিয়ে যেতে পারে বলে ধারণা। ফলে ভারত থেকে কিছু পুঁজি বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলি আমেরিকার বন্ড বাজারে সরাতে পারে। তবে ভারতের চাঙ্গা অর্থনীতি ও বিশাল বাজার তাদের ফিরিয়েও আনতে পারে।’’ তাঁর দাবি, তাই আগামী কয়েক দিন সূচক আরও পড়লেও, খুব শীঘ্রই ফের তা ঘুরে দাঁড়াবে। বরং এই পতন ভাল শেয়ার কেনার যে সুযোগ করে দিচ্ছে, তার সদ্ব্যবহার করা উচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement