—প্রতীকী চিত্র।
যে গতিতে উঠছিল সূচক, বুধবার নামতে শুরু করল প্রায় সে ভাবেই। তবে নামার আগেও তৈরি করল উচ্চতার নতুন নজির। যদিও দিনের শেষে লগ্নিকারীরা (বিএসই-তে) খুইয়েছেন ৮.৯১ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ।
এ দিন সকালে বাজার খোলার পরে ফের শুরু হয় শেয়ার সূচকের দৌড়। সেনসেক্স ৪৭৫.৮৮ পয়েন্ট উঠে এই প্রথম পৌঁছে যায় ৭২ হাজারের দোরগোড়ায়। নজির গড়ে ছুঁয়ে ফেলে ৭১,৯১৩.০৭ অঙ্কের শিখর। নিফ্টিও ১৩৯.৯ এগিয়ে প্রথম বার ২১,৫৯৩ হয়। তবে কোনওটিই রেকর্ড উচ্চতায় থিতু হতে পারেনি। বরং দিন শেষ করেছে বড় পতনে। এ দিন সাকুল্যে ৯৩০.৮৮ পয়েন্ট পড়েছে সেনসেক্স। নেমেছে ৭০,৫০৬.৩১ অঙ্কে। এক সময় আরও নীচে (৭০,৩০২.৬০) চলে গিয়েছিল। নিফ্টির নেমেছে ৩০২.৯৫। হয়েছে ২১,১৫০.১৫।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, উঁচু বাজারে পতনের আশঙ্কা বেশি থাকে। ফলে বহু লগ্নিকারী এখন হাতের শেয়ার বেচে মুনাফা ঘরে তোলার মেজাজে রয়েছেন। তার উপর ফের কোভিড নিয়ে সতর্ক করেছে কেন্দ্র। যে কারণে বিশ্ব বাজার চাঙ্গা থাকলেও, এ দেশে হুড়মুড়িয়ে নেমেছে সূচক। জিয়োজিৎ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের গবেষণা বিভাগের প্রধান বিনোদ নায়ারের দাবি, বিশ্ব বাজারে ফের মাথা তুলতে থাকা অশোধিত তেলের দামও বহু লগ্নিকারীকে শেয়ার বেচতে ইন্ধন জুগিয়েছে।
ভারতে কোভিডের নতুন রূপে ফিরে আসার খবর সূচকের এতটা পতনের অন্যতম প্রধান কারণ, মন্তব্য বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দীর। তিনি বলেন, “আপাতদৃষ্টিতে মুনাফার টাকা তুলে নেওয়ার জন্য বাজারের পতন মনে হলেও আসল কারণ ছিল কোভিডের ফিরে আসার খবরে তৈরি হওয়া আশঙ্কা।’’ আশিস জানান, ছোট ও মাঝারি মূলধনের সংস্থাগুলির শেয়ার দরই তুলনায় বেশি বেড়েছিল। এ দিন মূলত সেগুলিই পড়েছে।
আশিস-সহ সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকেরই দাবি, সূচক অল্প সময়ের মধ্যে লাফিয়ে বাড়লে ছোট কারণেও বেশি পতনের ঝুঁকি তৈরি হয়। ভারতের বাজারে ঝুঁকি মাপার সূচক বা ভোলাটিলিটি ইনডেক্স গত ৫ দিনে ৩.৮% বেড়ে গিয়েছে। তাই সূচকের আরও অনেকটা পড়ার আশঙ্কা বহাল।
তবে ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখ বলেন, “সূচক যেখানে উঠেছে, সেখান থেকে বড় সংশোধন হওয়াটাই স্বাভাবিক। আরও নীচে নামলে তবে বাজারের জমি পোক্ত হবে। কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ডের লগ্নি বাজারকে পড়তে দেবে বলে আমার মনে হয় না।’’