শুক্রবার ভারতের শেয়ার বাজারে যে বড় মাপের পতন আসতে চলেছে, তার ইঙ্গিত মিলেছিল বৃহস্পতিবার রাতেই। কারণ, আমেরিকার ডাও জোন্স সূচক এক ঝটকায় পড়ে গিয়েছিল ৫০০ পয়েন্ট। মূলত তার প্রভাবেই শুক্রবার বিশ্ব জুড়ে পড়েছে বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজার। যে ঝড়ের ধাক্কা লেগেছে ভারতের শেয়ার সূচকেও। সেনসেক্স নেমেছে ৬৮৯.৬০ পয়েন্ট। নিফ্টি ১৯৭.৭০ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময় সূচক দু’টি দাঁড়ায় ৩৫,৭৪২.০৭ ও ১০,৭৫৪ অঙ্কে।
সামনেই বড়দিন। লম্বা ছুটির মরসুম পশ্চিমি দুনিয়ায়। একে চিন-আমেরিকার মধ্যে শুল্কযুদ্ধ এখনও মেটার লক্ষণ নেই। তার উপরে আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমাগত ওঠানামা করছে অশোধিত তেলের দাম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অনিশ্চিত অবস্থায় লম্বা ছুটির মরসুমে হাতে সব শেয়ার রেখে দেওয়ার ঝুঁকি নিতে চাননি বিদেশি লগ্নিকারীরা। বিশেষত ফান্ড-সহ আর্থিক সংস্থাগুলি। তাঁদের মতে, এমনিতেই প্রতি বছর এই সময় ফান্ড সংস্থাগুলির মধ্যে হাতের শেয়ার কিছুটা খালি করার প্রবণতা থাকে। এ বার বিশ্ব অর্থনীতির আকাশে অনিশ্চয়তার মেঘ থাকায় তা আরও বেশি। মার্কিন মুলুক-সহ পশ্চিমি দেশগুলিতে বাজারে পতনের এটি অন্যতম কারণ বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
দেশের বাজারে অবশ্য সূচকের পতনে ইন্ধন জুগিয়েছে আরও কয়েকটি বিষয়ও। যেমন, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, গত দু’মাসে সেনসেক্স আড়াই হাজারেরও বেশি পয়েন্ট চড়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় সংশোধন তেমন হয়নি। তাই তাঁদের মতে, সূচকের বড় অঙ্ক পিছলে যাওয়া অপ্রত্যাশিত নয়। বরং তা হয়েছে বাজারের স্বাভাবিক নিয়ম মেনে। মাঝে বাজার চাঙ্গা থাকায় যে সব শেয়ারের দাম বেশ ভাল, সেগুলি বিক্রি করে বছর শেষে মুনাফাও ঘরে তুলতে চেয়েছেন অনেক লগ্নিকারী।
বাজার যে ভোট পর্যন্ত অনিশ্চিয়তার পেন্ডুলামেই দুলবে, সে বিষয়ে একমত অধিকাংশ বিশেষজ্ঞই। বিশ্ব অর্থনীতির নানা সমস্যায় তা বাড়তেও পারে। এই অনিশ্চয়তার প্রতিফলন এ দিন দেখা গিয়েছে দিনভর টাকার দামের ওঠানামাতেও।